পাহাড় প্রমাণ প্রতিকূলতা। পড়াশোনা যখন মাঝপথে তখনই বাবা চলে গিয়েছিলেন চিরতরে। এরপর শুরু নতুন করে বাঁচার লড়াই। ঘুঁটে বিক্রি করে, ঠোঙা বানিয়ে ছেলেকে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখাতেন মা। মেধা, নিষ্ঠা আর কঠিন পরিশ্রমের জেরে সেই ছেলের গবেষণাই আজ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। উজ্জ্বল করেছে দেশের মুখ। তিনি ডাঃ উজ্জ্বল পোদ্দার। আদি বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের পতিরাম। বালুরঘাট কলেজে পড়াশোনা। লখনউয়ের সঞ্জয় গান্ধী ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের ওই চিকিৎসকের গবেষণাপত্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্য়ালয়।
সব মিলিয়ে ১৮০টি গবেষণাপত্র লিখেছেন তিনি। তার মধ্যেই ওই মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় ১৫৯টি যাচাই করেছে। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত তালিকায় নাম রয়েছে ডাঃ উজ্জ্বল পোদ্দারের। এশিয়ার যে দুজন পেডিয়াট্রিক গ্যাস্ট্রো এন্টেরোলজিস্টের নাম ওই তালিকায় রয়েছে তার মধ্যে ডাঃ উজ্জ্বল পোদ্দার অন্য়তম।
কী বার্তা দেবেন তিনি আজকের প্রজন্মের জন্য? সংবাদ মাধ্যমের কাছে তিনি জানিয়েছেন, এই কৃতিত্বের বড় অংশীদার মা। জীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে খুব স্বচ্ছল পরিবার বা নামী দামী স্কুল না হলেও চলে। কেবল ইচ্ছেটা থাকা চাই। আর সেই ইচ্ছাশক্তিই তাঁকে এগিয়ে দিয়েছে অনেকটা পথ।
অত্যন্ত দারিদ্রতার মধ্যে কেটেছে তাঁর ছোটবেলা। ২০০৮ সালে বাবা মারা গিয়েছিলেন। বাবার দোকানটিকেও সেই সময় বিক্রি করে দিতে হয়। তারপর দুই সন্তানতে মানুষ করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন মা। সেই মা আজ অসুস্থ। ভাই সরকারি চাকুরে। আর ডাঃ উজ্জ্বল পোদ্দারের আজ দেশের গর্ব। মূলত আমেরিকায় গম থেকে অ্যালার্জির প্রবণতা রয়েছে। ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে এই প্রবণতা ছিল। সেসব নিয়েও তিনি আলোকপাত করেছেন তাঁর গবেষণাপত্রে।