উৎপল পরাশর
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অসম থেকে এক মহিলাকে সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। আর সেই মহিলা ও তার ১০ বছরের সন্তানের এখন ঠাঁই হয়েছে পাকিস্তানের জেলে। শুক্রবার পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ৩৬ বছর বয়সী ওই মহিলা নওগাঁও জেলার বাসিন্দা। গত বছর নভেম্বর মাসে তিনি অসম থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। দশ বছরের সন্তানকে নিয়ে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। এদিকে সেই মহিলা ও তাঁর সন্তান বর্তমানে পাক জেলে বন্দি রয়েছেন বলে খবর।
নগাঁও পুলিশ সুপার লীনা দোলে জানিয়েছেন, ওই মহিলার স্বামী বছর দুয়েকে আগে মারা যান। তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনও মারা গিয়েছেন। কয়েক মাস আগে ওই মহিলা তাঁর সম্পত্তি বিক্রি করে দেন। এরপর নগাঁও ছেড়ে গত নভেম্বর মাসে তিনি এক ব্যক্তির সঙ্গে চলে যান। এদিকে সেই ব্যক্তি বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলে খবর। কিন্তু কীভাবে জানা গেল তিনি পাকিস্তান জেলে বন্দি?
পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলার মা সম্প্রতি একটি আইনি সংস্থার মাধ্যমে একটি চিঠি পেয়েছিলেন। সেখানে জানানো হয়েছিল ওই মহিলা ও তার সন্তান পাকিস্তানের কোয়েতার জেলে বন্দি। এরপরই মহিলার মা মেয়েকে ফেরাতে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।এরপর ওই মহিলার মা মেয়ের কাছ থেকে একটি ফোনও পান। যেখানে তিনি মেয়ের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারেন।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, জেলের কোনও স্টাফ তাঁকে ফোন দিয়েছিলেন। তার মাধ্যমে সোশ্য়াল মিডিয়া প্লাটফর্ম ব্যবহার করে তিনি মাকে ফোন করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন বিয়ের কথা বলে তাকে সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রয়োজনীয় নথি ছিল না তাঁদের কাছে। এরপর তাকে পাকিস্তানে নিয়ে আসা হয়।
এর পাশাপাশি পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, পুলিশও তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পেরেছে। কীভাবে তিনি জেলে বন্দি হলেন তা দেখা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে তাঁকে ওই ব্যক্তি সৌদিতে নিয়ে গিয়েছিল। এরপর ভুয়ো নথি নিয়ে তারা যখন পাকিস্তানে প্রবেশের চেষ্টা করেন তখনই পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ তাকে গ্রেফতার করে।
তবে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন আলাদা একটি ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে মা ও সন্তানকে। তাদের ভালোভাবেই রাখা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। কোনও অত্যাচার করা হচ্ছে না। আর যে তাকে নিয়ে গিয়েছিল সে সম্ভবত কোনও আফগান। তাকে আলাদা রাখা হয়েছে।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন আমরা ওপরমহলের সঙ্গে কথা বলেছি। মা ও সন্তানকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।