প্রিয়াঙ্কা দেব বর্মন
ঝাঁকঝমকপূর্ণভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে গত ৫১ বছর ধরে পুজো হয়ে আসছে। কিন্তু পুজোর আগেই করোনাভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। সেজন্য এবার প্রতিমা ছাড়া দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছে ত্রিপুরার একটি পুজো কমিটি। রীতি মেনে শুধুমাত্র ঘট পুজো হচ্ছে।
১৯৫৩ সালে আগরতলার ঢালেশ্বর এলাকার তরুণ সংঘ ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। ৩২ জন মহিলা-সহ ক্লাবের বর্তমান সদস্য সংখ্যা ১০০-এর বেশি। প্রতি বছর মহিলা সদস্যরা পুজোর আয়োজন করেন। সারা বছরের ব্যস্ততা দূরে ঠেলে রেখে পুজোর কয়েকটা দিন মেতে ওঠেন আনন্দে। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপ এবারে সেই ছবিটা একেবারে আলাদা। ক্লাবের প্রাক্তন সচিব-সহ এলাকার তিনজনের করোনায় মৃত্যু হয়েছে। তাই মনখারাপকে সঙ্গী করেই একেবারে আড়ম্বরহীনভাবে পুজো হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে অঞ্জলির সময় পাঁচ-ছ'জনকে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ক্লাবের সভাপতি তরুণ কুমার সিনহা বলেন, 'কোভিড-১৯-এর জেরে আমাদের এলাকায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। অনেকে বাড়িতেই নিভৃতবাসে আছেন। আগের বছরের তুলনায় এ বছরটা আলাদা। মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিমা ছাড়া পুজোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। ১৯৬৮ সালে পুজো শুরুর পর থেকে এই প্রথমে ঘটের মাধ্যমে দেবী দুর্গার আরাধনা করা হচ্ছে। আর বিজয়া দশমীর শোভাযাত্রার সময় আমরা ভিড় এড়াতে চাইছিলাম।'
অন্য প্রথাতেও কাটছাঁট করা হয়েছে। এবার পুজোর ভোগও অন্যদের দেওয়া হবে না। ক্লাবের সভাপতি বলেন, 'আগের বছর ক্লাবের ১১ জন মহিলা সদস্য ভোগ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু এবার তিনজন প্রতিদিন ভোগ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেক্ষেত্রে মেনে চলা হবে সামাজিক দূরত্বের বিধি। অন্যবারের মতো এবার আর দর্শনার্থীদের ভোগ দেওয়া হবে না।'
একইসঙ্গে পুজোর বাজেটও অনেক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্লাবের সভাপতি জানান, গত বছর পুজো আয়োজন ৩.৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারণে এবার মেরেকেটে ৪৫,০০০-৫০,০০০ টাকা খরচ করা হচ্ছে। যাবতীয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে চাঁদাও তোলা হয়নি। ক্লাবের তহবিল থেকেই যাবতীয় খরচ করা হচ্ছে।