উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ ক্রমেই 'ডুবে' যাচ্ছে। পায়ের তলায় মাটি আলগা হয়েছে এই শহরের হাজার হাজার বাসিন্দার। আর এরই মাঝে এবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল উত্তর ভারতের আরও এক পাহাড়ি রাজ্য। শনির সকালে আচমকাই ভূমিকম্প অনুভূত হয় হিমাচলপ্রদেশে। জানা গিয়েছে, কম্পনের মাত্রা তীব্র ছিল না। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা মাত্র ৩.২ ছিল। মূলত হিমাচলপ্রদেশের চাম্বা জেলাতেই এই কম্পন অনুভূত হয়েছে।
ভূমিকম্পটি ভোর ৫টা ১৭ মিনিট নাগাদ অনুভূত হয়। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫ কিলোমিটার গভীরে। এক টুইট বার্তায় ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির তরফে লেখা হয়, '৩.২ মাত্রার ভূমিকম্পটি ২০২৩ সালের ১৪ জানুয়ারি ভোর ৫টা ১৭ মিনিটে আঘাত হানে। কম্পনটি অনুভূত হয় - অক্ষাংশ: ৩২.২৫ এবং দৈর্ঘাংশ: ৭৬.৫৬, গভীরতা: ৫ কিমি, অবস্থান: হিমাচলপ্রদেশের ধর্মশালার ২২ কিমি পূর্বে।'
এর একদিন আগেই উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশি কেঁপে উঠেছিল ভূমিকম্পে। কম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ২.৯। চামোলি দেলার জোশীমঠেও কম্পন অনুভূত হয়েছিল। ভূমি অবনমনের মাঝে এই কম্পনের জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে। তুষারপাত, বৃষ্টি, ভূমি অবনমন, ধস মিলিয়ে উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠের পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। হিমালয়ের গাড়োয়াল অঞ্চলে অবস্থিত জোশীমঠের ৬০০টিরও বেশি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ধসে পড়েছে মন্দির। পর্যটকদের জন্য বন্ধ করা হয়েছে এশিয়ার দীর্ঘতম রোপওয়ে। একাধিক হোটেল পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে। আপাতত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সুরক্ষিত জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভূমি অবনমনের কারণে জোশীমঠের অস্তিত্ব নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিগত কয়েকদিনে বেশ কয়েক সেন্টিমিটার 'ডুবে' গিয়েছে জোশীমঠ। সেখানে ফাটল ধরা বাড়ি এবং হোটেল চিহ্নিত করে ভাঙার কাজ চলছে। এই অবনমনের জন্য এনটিপিসির প্রকল্পকে দায়ী করা হচ্ছিল। তবে কেন্দ্রকে এনটিপিসি জানিয়েছে, তাদের খনন কাজের জন্য এই অবনমন হয়নি।
দাবি করা হয়, ‘পুরনো ভূমিধ্বসের উপর’ তৈরি হয়েছিল চামোলি জেলার এই শহরটি। এই কারণেই বারবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয় জোশীমঠ। এই আবহে একটি বিশেষজ্ঞের দল গঠন করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। সেই দলটি গিয়ে ফাটল ধরা বাড়িতে গিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছে। নির্বিচারে গাছ কাটা ও পাহাড় কেটে নির্মাণকাজের জেরেই আজ এই পরিস্থিতি বলে মত অনের বিশেষজ্ঞর। কেন্দ্রের তরফেও একটি বিশেষজ্ঞ দল গঠন করা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup