বাজেটের আগেরদিন আশার আলো দেখাল আর্থিক সমীক্ষা। সোমবার সংসদে পেশ করা আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্টে দাবি করা হল, চিনকে টপকে ভারতের সামনে আবারও বিশ্বের দ্রুততম আর্থিক বৃদ্ধির দেশ হয়ে ওঠার সুযোগ আছে।
এমনিতে করোনাভাইরাসের ধাক্কায় ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ভারতের অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছিল। ২০২১-২২ অর্থবর্ষের শুরুতেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর থেকে কিছুটা অক্সিজেন পায় ভারতের অর্থনীতি। ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা যায়। আগের বছরের তুলনায় ২০২১-২২ অর্থবর্ষের সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে জিডিপি বেড়েছিল ৮.৪ শতাংশ। যা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম দ্রুত ছিল। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, সার্বিকভাবে প্রাক-করোনাভাইরাস স্তরে পৌঁছে গিয়েছে ভারতের কর্মকাণ্ড। ‘প্রায় সকল মাপকাঠিতেই দেখা গিয়েছে যে স্বাস্থ্যগত দিক থেকে বেশি প্রভাব পড়লেও ২০২০-২১ অর্থবর্ষে পূর্ণ লকডাউনের তুলনায় (চলতি অর্থবর্ষের) প্রথম ত্রৈমাসিকে দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় অর্থনৈতিক প্রভাব কম ছিল।’
সেই রেশ বজায় রেখে চলতি অর্থবর্ষে ভারতে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৯.২ শতাংশ হতে পারে বলে আর্থিক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে আট থেকে ৮.৫ শতাংশ হারে বাড়তে পারে ভারতের জিডিপি। করোনাভাইরাস টিকাকরণ, জোগান সংক্রান্ত খাতে সংস্কার, করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল, রফতানি বৃদ্ধি, মূলধনী খাতে ব্যয় বৃদ্ধির মতো বিষয়ের সমর্থন পাবে ভারতের অর্থনীতি। তবে আর্থিক সমীক্ষায় স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাসের নতুন কোনও ঢেউ আছড়ে পড়বে না, করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ কার্যকর হবে না - এমনটা আশা করেই দেওয়া হয়েছে আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস। সেইসঙ্গে স্বাভাবিক বর্ষা, বিশ্বের বিভিন্ন ব্যাঙ্কের অবস্থান, বিশ্বব্যাপী জোগান শৃঙ্খলের ঘুরে দাঁড়ানো এবং বিশ্ব বাজারে ব্যারেলপিছু অপরিশোধিত তেলের দাম ৭০-৭৫ ডলারের মধ্যে থাকবে ধরে নিয়ে সেই আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাসের জেরে কোন ক্ষেত্র সবথেকে কম প্রভাবিত হয়েছে?
আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, মহামারীর সবথেকে কম প্রভাব পড়েছে কৃষিক্ষেত্রে। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে কৃষিক্ষেত্র ৩.৬ শতাংশ বেড়েছিল। চলতি অর্থবর্ষে ৩.৯ শতাংশ হারে বাড়তে পারে ভারতের কৃষিক্ষেত্র।