লাগাতার বেড়েছে খাদ্যশস্য কেনা এবং বণ্টনের খরচ। কিন্তু বাড়েনি রেশনের মূল্য। সেই পরিস্থিতিতে ক্রমশ বাড়ছে আর্থিক বোঝার ভার। এমনই দাবি করে অর্থনৈতিক সমীক্ষায় রেশনের চাল এবং গমের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হল।
জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন অনুযায়ী, রেশনের ক্ষেত্রে বড় অঙ্কের ভর্তুকি দেয় সরকার। তার জেরে প্রতি মাসে তিন টাকা কেজি দরে চাল এবং দু'টাকা কেজি দরে গম-সহ পাঁচ কেজি খাদ্যশস্য কিনতে পারেন রেশন কার্ডধারীরা। ২০১৩ সালে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়নের পর থেকে সেই অঙ্কটা আর বাড়েনি। কিন্তু খাদ্যশস্য কেনা এবং বণ্টনের জন্য ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার খরচের বহর ক্রমশ বেড়ে চলেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ সালে প্রতি কেজি চালের জন্য সরকারের খরচ হত ২৬ টাকা। চলতি অর্থবর্ষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ টাকা। ওই সময়ের মধ্যে প্রতি কেজি গমের খরচ আট টাকা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২৭ টাকা। সেই সঙ্গে আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তার জেরে স্বভাবতই বেড়েছে সরকারের ভর্তুকির মাত্রা এবং খরচ। চাপ পড়েছে কোষাগারে।
শুক্রবার সংসদে পেশ করা অর্থনৈতিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, 'খাদ্যে ভর্তুকি বিলের ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বড় হচ্ছে। খাদ্য সুরক্ষার প্রতি অঙ্গীকারের ফলে যেহেতু খাদ্যশস্যের খরচ কমানো কঠিন, সেই পরিস্থিতিতে ভর্তুকির পরিমাণ রেশনের মূল্য সংশোধনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার প্রয়োজন আছে।'
যদিও সেই প্রস্তাবের কোনও ভিত্তি খুঁজে পাচ্ছেন না অর্থনীতিবিদদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, ভর্তুকির খরচ বাঁচানোর থেকে আমজনতার জীবন বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে রেশন ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা যায়নি সেই ধাক্কা। তারইমধ্যে সমীক্ষার প্রস্তাব যদি সরকার গ্রহণ করে, তা দেশের মানুষের পক্ষে বিপজ্জনক হবে। সরকারকে যদি আর্থিক ঘাটতি পূরণ করতে হয়, তাহলে অন্য উপায় বের করা হোক। রেশনের ভর্তুকিতে কোপ মারার কোনও প্রয়োজন নেই বলে মত তাঁদের।