নোট বাতিলের সময় ব্যাঙ্কগুলিতে জমা থাকা কালো টাকা উদ্ধারের কাজ শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এবার আদালতের নির্দেশের ইডি এক জুয়েলারির কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা ৭৯ কোটি টাকা এসবিআইকে ফেরত দিল। হায়দরাবাদের মুসাদ্দিলাল জুয়েলার্স প্রাইভেট লিমিটেড এবং অন্যান্য সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে অর্থ পাচার মামলায় ইডি প্রচুর টাকা বাজেয়াপ্ত করেছিল। অভিযোগ ওঠে, ওই জুয়েলার্স কোম্পানি ভুয়ো গ্রাহক দেখিয়ে এই প্রচুর টাকা ব্যাঙ্কে জমা করেছিল। সেই টাকা বাজেয়াপ্ত করে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াকে ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করেছে ইডি।
আরও পড়ুন: 'এখন আরও বেশি নগদ ব্যবহার করে মানুষ', নোটবন্দির অষ্টম বর্ষপূর্তিতে তোপ রাহুলের
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, নোট বাতিলের পরপরই মুসাদ্দিলাল জুয়েলার্স ১১১ কোটি টাকার পুরনো নোট ব্যাঙ্কে জমা করেছিল। ভুয়ো গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম পেমেন্ট হিসেবে দেখিয়ে এই পরিমাণ টাকা জমা দেওয়া হয়েছিল। জানা যায়, কোম্পানিটি প্রায় ৬০০০ ভুয়ো গ্রাহকের নামে ২ লক্ষ টাকার কম মূল্যের জাল বিল তৈরি করেছিল। পরে এই টাকা দিয়ে সোনা কেনা হয় এবং বিক্রি করে অতিরিক্ত ২৮ কোটি টাকা লাভ করে কোম্পানিটি। এরপর ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে নোট বাতিলের সময়সীমা শেষ হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ইডি মুসাদ্দিলাল জুয়েলার্সে তল্লাশি চালিয়ে ৮৩ কোটি টাকার গয়না বাজেয়াপ্ত করে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, এগুলি ব্যাঙ্কে জমা করা ক্লায়েন্টদের কালো টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে। মঙ্গলবার ইডি জানিয়েছে, মুসাদ্দিলাল জুয়েলার্স প্রাইভেট লিমিটেড এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার মামলার তদন্ত করা হচ্ছে। কোম্পানিটি প্রায় ৬,০০০ ভুয়ো গ্রাহকের থেকে অগ্রিম অর্থ গ্রহণের অজুহাতে ২ লক্ষ টাকার কিছু কম মূল্যের জাল ইনভয়েস তৈরি করে জমা করেছিল। জানা যায়, এসবিআই মুসাদ্দিলাল জুয়েলার্সকে অনেক ঋণ সুবিধা দিয়েছিল। কিন্তু, কোম্পানিটি সময়মতো ঋণ পরিশোধ করেনি। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে কোম্পানির ঋণের অর্থকে এনপিএ ঘোষণা করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত কোম্পানিটি এসবিআইয়ের কাছে ১২০ কোটি টাকারও বেশি ঋণী ছিল।
আরও জানা গিয়েছে, ইডি ২০১৭ সালের ১২ জানুয়ারি এবং ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিলে অভিযান চালিয়ে ৮৩.৩০ কোটি টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে। এর পরে ১৩০.৫৭ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। পরে সম্পত্তি ফেরত পেতে PMLA-এর ধারা ৮(৮)-এর অধীনে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল এসবিআই।এদিকে, কোম্পানিটির ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত এসবিআইয়ে বকেয়া ছিল ১২০ কোটি টাকারও বেশি। আদালত গত ৩ ফেব্রুয়ারি এসবিআইকে বাজেয়াপ্ত করা সম্পদ ফেরত দেওয়ার জন্য ইডিকে অনুমতি দেয়।