কড়াইতে তেল ঢালতে গেলেই পকেটে পড়বে টান। ভোজ্য তেলের আমদানি শুল্ক বাড়াল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সরকার অপরিশোধিত বা ক্রুড এবং পরিশোধিত বা রিফাইন, উভয় তেলের জন্যই আমদানি শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা করেছে। ক্রুড পাম তেল, সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেলের বেসিক শুল্ক, শূন্য থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। যেখানে রিফাইন সয়াবিন তেল, পাম তেল এবং সূর্যমুখী তেলের ক্ষেত্রে তা ১২.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩২.৫ শতাংশ করা হয়েছে।
বিভিন্ন খাতে সুবিধা হবে
প্রথমত, সরকারের এই সিদ্ধান্তে দেশের তেল ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা পূরণ হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই শুল্ক বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিল তারা। সয়াবিন প্রসেসর অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার (সোপা) চেয়ারম্যান ডেভিস জৈন দিল্লি গিয়ে, কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের সঙ্গে দেখা করেছেন। সোপা দীর্ঘদিন ধরে আমদানি করা তেলের ওপর শুল্ক বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছে। এবার সরকার তাদের কথা রাখায়, অ্যাসোসিয়েশন বলেছে যে, এর মাধ্যমে কৃষকরা নিজেদের পণ্যের ন্যূনতম সমর্থন মূল্য (এমএসপি) অবশ্যই পাবেন। কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়বে। দেশীয় তেল ইন্ডাস্ট্রির চাপও দূর হবে।
পুজোর আগেই দাম বাড়ার আশঙ্কা
লোকসভা নির্বাচনের সময় মুদ্রাস্ফীতি থেকে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে, ২০২৩ সালে কেন্দ্রীয় সরকার শুল্ক কমিয়েছিল। এরপর বিদেশ থেকে সস্তায় তেল আমদানি শুরু হয়। এ কারণে দেশে তেলের দামও কমেছে। বর্তমানে তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়। এবার সরকার যখন ভোজ্য তেলের আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে ৩২.৫ শতাংশ করেছে, তখন রিফাইন সয়াবিন তেলের দাম আরও ২৫ থেকে ৩০ টাকা বাড়বে। দুর্গাপুজোর আগেই এই হার বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে, সরকারের এই তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে বড় দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। দাবি করা হচ্ছে যে, কৃষকেরা যখন সমর্থন মূল্যের চেয়ে খোলা বাজারে তেলের দাম ভালো পাবেন। তখন আর তাঁরা কেন্দ্রমুখী হবেন না। এমতাবস্থায় কৃষকদের থেকে তেল কেনা ও টাকা দেওয়ার চাপ কমে যাবে সরকারের। স্থানীয় তৈলবীজ কৃষকদেরও ভালো আয় হবে। তবে, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের পকেটে বোঝা পড়বে। তাই দুর্গাপুজো ও দীপাবলির আগে পরিশোধিত তেলের দাম বাড়ার পূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি সপ্তাহ থেকেই এর প্রভাব দেখা যেতে পারে
আরও পড়ুন: (Ganesh Pujo: সাউন্ডটা একটু কমাবে? গণেশ পুজোয় তারস্বরে গান, সহ্য করতে না পেরে নিজেকে শেষ করলেন হৃদরোগী)
ভোজ্য তেলের আমদানি কমতে পারে
ভারত তার ভোজ্য তেলের ৭০ শতাংশ অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করে। প্রধানত ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ড থেকে পাম তেল এবং আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে সোয়াইল এবং সূর্যমুখী তেল আমদানি করে। অতএব, কেন্দ্রের এইভাবে আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির কারণে, বাইরে থেকে ভোজ্য তেল আমদানিও হ্রাস পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।