উদ্ধবের থেকে কয়েক গুণ বেশি আসন এসেছে ঝুলিতে। এই আবহে শিবসেনা প্রধান তথা বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করলেন, 'আসল শিবসেনা' কোনটি তা মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে। আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একনাথ শিন্ডে বললেন, 'এটি একটি ঐতিহাসিক বিজয়। গত আড়াই বছরে আমাদের অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি এবং ব্যাপক উন্নয়নের কারণে মহারাষ্ট্রের জনগণ আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আজ জনসাধারণ দেখিয়ে দিয়েছে যে বালাসাহেবের শিবসেনা কোনটি... মানুষ ঠিক করেছে আসল শিবসেনা কে। ২০১৯ সালের মতো এবারও আমরা ৫৬টি আসনে জিতেছি। তারা (কংগ্রেস) যেখানেই হেরেছে সেখানেই আপত্তি তুলেছে... ঝাড়খণ্ডে কি ইভিএম ঠিক আছে? যখন তারা জিতেছে তখন ইভিএম সঠিক। যখন হারতে হচ্ছে, সেখানে সমস্যা হয় ইভিএম।' (আরও পড়ুন: বাংলা-ঝাড়খণ্ডে এই 'ফর্মুলায়'মেলেনি অঙ্ক, দিল্লিতেও কি সেই ছকেই সমীকরণ কষবে BJP?)
আরও পড়ুন: ঝাড়খণ্ডে হেমন্তের কাছে ফেল হিমন্ত, অসমের উপনির্বাচনে কেমন ফল BJP-র?
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রে মহাযুতি জোট বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়েছে। লোকসভা ভোটে এই রাজ্যে মহাবিকাশ অঘাড়ি জোটের কাছে পর্যদস্তু হওয়ার পর জোরালো ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিজেপি, একনাথ শিন্ডের শিবসেনা এবং অজিত পাওয়ারের এনসিপির জোট। সেখানে বিজেপি একাই ১৩০-এর গণ্ডি পার করেছে। এই আবহে এখন লড়াই আর মহাযুতি বনাম মহাবিকাশ অঘাড়ির নয়। এই লড়াই যেন বিজেপি বনাম শিন্ডে সেনার। এই 'লড়াই' অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর গদির জন্যে। যদিও জোটের কোনও দলে কোনও বিবাদ নেই বলে দাবি দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের। (আরও পড়ুন: চারে BJP, বিধানসভা উপনির্বাচনে TMC হারলেও অভিনন্দন জানালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়)
আরও পড়ুন: বাংলায় ধরাশায়ী, অন্য রাজ্যগুলিতে মুখরক্ষা বামেদের, কোথায় উড়ল লাল ঝান্ডা?
আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দেবেন্দ্র ফড়বীস বলেন, 'মহারাষ্ট্রের মানুষ আমাদের অভূতপূর্ব জয় দিয়েছে। এতে বোঝা যায় মানুষ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আছে। তিনি যে 'এক হ্যায় তো নিরাপদ হ্যায়' স্লোগান দিয়েছিলেন, তার সাথে সহমত পোষণ করে রাজ্যের সমস্ত বর্গ এবং সম্প্রদায়ের মানুষ। তাই তারা ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের পক্ষে ভোট দিয়েছে... এটি মহাযুতি, সিএম একনাথ শিন্ডে, ডেপুটি সিএম অজিত পাওয়ার এবং রামদাস আঠাওয়ালের জয়। এটা ঐক্যের বিজয়। মানুষ তাদের মতামত জানিয়ে দিয়েছে এবং মানুষ একনাথ শিন্ডেকে আসল শিবসেনা হিসেবে মেনে নিয়েছে এবং অজিত পাওয়ার এনসিপির নেতা হিসেবে বৈধতা পেয়েছেন। আমি আগেই বলেছিলাম যে আমি একজন আধুনিক অভিমন্যু এবং জানি কীভাবে 'চক্রব্যূহ' ভাঙতে হয়... তবে আমি মনে করি, এই জয়ে আমার অবদান সামান্য, এটা আমাদের দলের জয়।' এরই সঙ্গে দেবেন্দ্র বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর মুখ নিয়ে কোনও বিতর্ক থাকবে না। প্রথম দিন থেকেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, নির্বাচনের পর তিন দলের নেতারা একসঙ্গে বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। সিদ্ধান্ত সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে, এ নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই।' (আরও পড়ুন: বাংলায় মমতার গদি বাঁচিয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোর, বিহারে সেই PK-র দল কেমন ফল করল?)
আরও পড়ুন: RSS-এর 'জাদুকাঠিতে' ঘুরে দাঁড়াল BJP? ফল সামনে আসতেই জোর চর্চা মহারাষ্ট্রে
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৪ সালে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। এরর ২০১৯ সালের ভোটের পর তিনদিনের জন্যে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন দেবেন্দ্র। ২০১৯ সালেই জোট বেঁধে নির্বাচনে লড়েছিল বিজেপি এবং শিবসেনা। তবে মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে বিবাদের জেরে উদ্ধব ঠাকরে হাত মিলিয়েছিলেন এনসিপি-কংগ্রেসের সঙ্গে। পরবর্তীতে শিবসেনাকে ভাঙিয়ে এনে জোট সরকার গড়ে বিজেপি। সেই জোটে বিজেপি 'বড় দাদা' হলেও তারা মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেয় একনাথ শিন্ডেকে। সেবার কোনও পদে থাকবেন না বলে ঘোষণাও করে দিয়েছিলেন দেবেন্দ্র। পরে দলের 'নির্দেশে' তিনি উপমুখ্যমন্ত্রী হন। পরে এনসিপি ভাঙিয়ে এনেও জোটে সামিল করে বিজেপি। অজিত পাওয়ারও উপমুখ্যমন্ত্রী হন। তবে এবার বিজেপি একাই 'ম্যাজিক ফিগার'-এর কাছে পৌঁছে গিয়েছে। দলের 'স্ট্রাইক রেট' ৮৫ শতাংশের ওপরে। এই আবহে দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।