মল্লিকা সোনি
ফের ফিরছে এল নিনো। তিন বছর পরে ফিরে আসছে এল নিনো। আর তার জেরে গোটা বিশ্বের তাপমাত্রায় বড় পরিবর্তন হতে পারে। আরও কি উষ্ণ হতে পারে এই পৃথিবী? নাসা জানিয়েছে, ১৯ শতকের শেষ দিকে এই পৃথিবী যতটা উষ্ণ ছিল তার তুলনায় ২০২২ সালে পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রায় ১.১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বেশি । ইন্ডিয়ান মেটেরোলজিকাল ডিপার্টমেন্টের মতে, ১৯০১ সাল থেকে এই বছর পর্যন্ত ২০২২ সালটা হচ্ছে পঞ্চম উষ্ণতম বছর। কিন্তু এল নিনো ব্যাপারটা ঠিক কী?
আক্ষরিক অর্থে এলনিনো মানে ছোট্ট ছেলে। স্প্যানিশ ভাষায় বলা হয় ছোট্ট যীশু। ১৬০০ সালে দক্ষিণ আমেরিকার মৎস্যজীবীরা প্রথম প্রশান্ত মহাসাগরে এই আবহাওয়ার পরিবর্তনের বিষয়টি নজরে আনেন। এদিকে ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসের মধ্যে প্রতি তিন ও সাত বছর অন্তর এই আবহাওয়ার ধরণের বদল ঘটে। বায়ু, সমুদ্র স্রোত, সমুদ্রের ও আবহাওয়ার তাপমাত্রার ভারসাম্য নষ্ট হওয়া ও বায়োস্ফিয়ারের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার জেরে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়।
এল নিনো হলে আবহাওয়ার কী পরিবর্তন হয়?
এল নিনোর জেরে ঠান্ডা জল কোনওভাবেই ভৌম তলে আসতে পারে না। এর জেরে জল অস্বাভাবিকভাবে গরম হয়ে যায়।
এল নিনোর প্রভাবে ঠিক কী হতে পারে?
উষ্ণ জল মৎস্যচাষের ক্ষেত্রে মারাত্মক খারাপ প্রভাব ফেলে। গড় বৃষ্টিপাতের তুলনায় বেশি বৃষ্টি হতে শুরু করে। আবার তার বিপরীত ঘটনাটিও রয়েছে। এল নিনোর প্রভাবে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষি এশিয়ার একাংশে প্রচন্ড খরা পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রশান্ত মহাসাগরে সাইক্লোন ও টাইফুনের প্রবনতাও বাড়িয়ে দেয় এই এল নিনো।
কার্যত আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জেরে গোটা বিশ্বকে ভুগতে হচ্ছে। এবার ফের এল নিনো ফিরে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রে ফের আবহাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বদলের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। বিগত দিনে গোটা বিশ্বকে ভুগতে হয়েছিল এই এল নিনোর প্রভাবে। কোথাও খরা আবার কোথায় অতিবৃষ্টির প্রবনতা তৈরি হয়েছিল। যার প্রভাব পড়েছিল কৃষি ক্ষেত্রে। যার প্রভাব পড়েছিল মৎস্যচাষে। তবে এবার সেই দুঃস্বপ্নের দিনগুলো ফিরতে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। সেক্ষেত্রে এবার পৃথিবীর উপর ঠিক কী ধরনের প্রভাব পড়ে সেটাই এখন দেখার। এনিয়ে গোটা বিশ্বজুড়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে।