বৈঠক হল। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের তোলা প্রশ্নের মুখে পড়ে ‘রিমোট ভোটিং মেশিন’ (আরভিএম) প্রদর্শনই করতে পারল না জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এই মেশিনের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না? তা নিয়ে সওয়াল করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। যার জেরে বাড়ানো হল রাজনৈতিক দলগুলির মতামত দেওয়ার সময়সীমা। আগে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে মতামত জানাতে বলা হয়েছিল। এবার চাপের মুখে পড়ে সময়সীমা বাড়িয়ে এখন ২৮ ফেব্রুয়ারি করা হল। এই বিষয়টি নিয়ে চেপে ধরেন তৃণমূল কংগ্রেসের দুই প্রতিনিধি সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মহুয়া মৈত্র।
এদিন পরিযায়ী শ্রমিক এবং ভিনরাজ্যে বসবাসকারী ভোটারদের জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত রিমোট ভোটিং মেশিন চালু করার বিরোধিতা করল বিরোধীরা। তার মধ্যে বাড়তি মাত্রা যোগ করে তৃণমূল কংগ্রেস। নয়াদিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে হওয়া সর্বদলীয় বৈঠকে আওয়াজ তোলেন বিরোধী নেতা–নেত্রীরা। আর তার জেরে মেশিন পড়ে রইল একপাশে। তার প্রদর্শন হল না। অথচ সেটি চাক্ষুস করতেই বৈঠক ডেকেছিল নির্বাচন কমিশন। আগামী লোকসভা নির্বাচনেই এই মেশিন কার্যকর করতে চায় নির্বাচন কমিশন। একটি মেশিনই ৭২টি লোকসভা কেন্দ্রের ভোট বন্দি করতে সক্ষম।
এদিকে বিরোধীদের যুক্তি, কোন রাজ্যে কত ভিন রাজ্যের মানুষ কর্মসূত্রে বা অন্যান্য কারণে বসবাস করেন? তার কোনও তথ্য কমিশন বা কেন্দ্রের কাছে নেই। এভাবে ভোট স্বচ্ছ এবং অবাধ হবে কি? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশনের সচিব বি সি পাত্রকে ১০ জানুয়ারি চিঠি দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’পাতার চিঠিতে তাঁর অভিযোগ, রিমোট ভোটিং ব্যবস্থার ফলে ভোট গ্রহণে ‘কারসাজি’ হতে পারে। নির্বাচন কমিশনের ডাকা বৈঠকে সরব হন তৃণমূল কংগ্রেসের আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশে ছিলেন দলের আর এক সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
ঠিক কী বলেছেন সাংসদ? অন্যদিকে এই বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার–সহ কমিশনের ফুল বেঞ্চই উপস্থিত ছিল। সেখানে কল্যাণবাবু বলেন, ‘আগে তো ঠিক হোক কারা পরিযায়ী ভোটার। তারপর সিদ্ধান্ত হবে কীভাবে ভোট হবে। পরিযায়ী ভোটারের সংজ্ঞা কী? তার কোনও নির্দিষ্ট তালিকা আছে কি? তাহলে কেন এই উদ্যোগ? যে রাজ্যে ভোট নেই, সেখানে ভোট হওয়া রাজ্যের ভোটার থাকলে কীভাবে আদর্শ নির্বাচনী বিধি কার্যকর হবে? ভোটার যদি অন্য রাজ্য থেকে ভোট দেন, তাহলে সেখানে কোনও দলের দাদাগিরির মুখে পড়বে না, তার গ্যারান্টি কোথায়? রাজ্যে রাজ্যে কোনও দলের পক্ষে তো নির্বাচনী এজেন্ট পাঠানো সম্ভব নয়।’ শুধু নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে সওয়াল করলেন বিজু জনতা দলের সাংসদ অমর পট্টনায়ক।