মধ্যপ্রদেশের বান্ধবগড় টাইগার রিজার্ভে একের পর এক ১০টি হাতির মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় গোটা দেশ। হাতিদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে উঠে আসছে একাধিক তত্ত্ব। তারই মধ্যে সামনে এসেছে প্রাথমিক ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। তাতে কী কারণে এই হাতিগুলির মৃত্যু হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে মৃত্যুর পিছনে সম্ভাব্য কারণ হিসাবে বিষাক্ত ছত্রাক সংক্রমিত কোদো বাজরাকেই দায়ী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বান্ধবগড়ের জঙ্গলে সাতটি হাতির মৃত্যু, আশঙ্কাজনক আরও দুই, বিষক্রিয়াই কারণ?
বান্ধবগড়ে তিন দিনের মধ্যে পর পর ১০ টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। আধিকারিকরা বলছেন, ১৩টি হাতির ওই দলের মধ্যে বাকি তিনটি হাতি এখনও সুস্থ আছে। তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। টাইগার রিজার্ভ এবং চিকিৎসকদের দল ক্রমাগত তাদের পর্যবেক্ষণ করে চলেছেন।
ভোপাল থেকে আসা এপিসিসিএফ (বন্যপ্রাণী) এল কৃষ্ণমূর্তি জানান, হাতির চিকিৎসা করতে আসা পশু বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। যারা ময়নাতদন্ত করেছেন তারা বলছেন, হাতির পেট থেকে প্রচুর পরিমাণে মাইকোটক্সিন (এক ধরনের ছত্রাকের বিষ) পাওয়া গিয়েছে। চিকিৎসকরা হাতির পেটের ভিতরে সংক্রামিত কোদো বাজরার অংশ খুঁজে পেয়েছেন। স্কুল অফ ওয়াইল্ডলাইফ ফরেনসিক অ্যান্ড হেলথ এবং জবলপুরের বন্যপ্রাণী স্বাস্থ্য আধিকারিকরা ৯ টি হাতির দেহের ময়নাতদন্ত করেছেন। তাতে প্রত্যেকটি হাতির পেট থেকে এগুলি উদ্ধার হয়েছে।
আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, ময়নাতদন্তে হাতির পেটে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কোদো বাজরা পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি খাওয়ার ফলেই বিষক্রিয়ায় হাতিগুলির মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর পরেই বন বিভাগ দু'দিনের মধ্যে ওই এলাকায় কোদো বাজরা নষ্ট করার নির্দেশ দিয়েছে। আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, বিষাক্ত এই বাজরা খাওয়ার ফলে হাতিগুলির লিভার, ফুসফুস, অন্ত্র এবং কিডনির গুরুতর ক্ষতি হয়েছে।
মাইকোটক্সিন সম্পর্কে আরও গভীর পর্যবেক্ষণ করতে আধিকারিকরা আইভিআরআই-বারেলি, ডব্লিউআইআই-দেরাদুন, এফএলসি এবং সিসিএমবি-হায়দরাবাদের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। ভিসেরার নমুনাগুলি আরও বিশ্লেষণের জন্য সাগর, জবলপুর এবং বারেলির পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছিল। এদিকে, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সমস্ত রেঞ্জ অফিসারদের তাদের এলাকায় কোদো বাজরা পরিদর্শন ও ধ্বংস করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভার্মা আরও উল্লেখ করেছেন, কিছু কোদো ফসল সময়মতো কাটা হয়নি। তারফলে এই ছত্রাকের সংক্রমণ হয়েছিল।