রদারহ্য়াম গ্রুমিং কেলেঙ্কারি নিয়ে এবার সরব হলেন ইলন মাস্ক। বুধবার এ নিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তাৎপর্যপূর্ণ একটি পোস্ট করেছেন এই মার্কিন ধনকুবের। একটি পোস্ট শেয়ার করে, তার ক্যাপশনে মাস্ক লিখেছেন, 'ব্রিটেনে ক্ষমতার বিভিন্ন স্তরে থাকা একাধিক ব্যক্তিকে এই ঘটনার জন্য জেলে পোরা উচিত!'
পরবর্তীতে তিনি আবারও লেখেন, 'সংস্কারের জন্য নির্বাচন, এটাই একমাত্র আশা জাগাতে পারে।'
কেন এই পোস্ট করলেন ইলন মাস্ক?
উল্লেখ্য, রদারহ্য়াম গ্রুমিং কেলেঙ্কারি নিয়ে অ্যালেক্সিস জয়-এর যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল, তার প্রেক্ষিতেই এই মন্তব্য করেছেন ইলন মাস্ক। নাবালিকাদের উপর যৌন অত্যাচার সংক্রান্ত সেই রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়েছিল ২০১৪ সালের ২১ অগস্ট। কিন্তু, পরবর্তীতে সেই রিপোর্টটি অসংখ্য এক্স ইউজার নিজেদের প্রোফাইলে পোস্ট ও রিপোস্ট করেন।
কী এই রদারহ্যাম গ্রুমিং কেলেঙ্কারি?
২০১৪ সালের সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়, টানা প্রায় ১৬ বছর ধরে অন্তত ১,৪০০ নাবালিকার উপর এই নির্যাতন চালানো হয়! এবং সংশ্লিষ্ট সরকার বা প্রশাসন তা বন্ধ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়।
সেই রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়, এই কেলেঙ্কারিতে যে নাবালিকারা আক্রান্ত হয়েছিল, তাদের মধ্যে কারও কারও বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর। তাদের বিভিন্ন জায়গায় পাচার করা হয়, তাদের উপর অকথ্য শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালানো হয়। এমনকী, তাদের একাধিকবার ধর্ষণ পর্যন্ত করা হয়।
বিষয়টি যে প্রশাসনের অজানা ছিল, তা একেবারেই নয়। 'রিস্কি বিজনেস'-এর মতো প্রয়াসের মাধ্যমে প্রশাসনকে এ নিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। ঘটনা যে ঘটছে, তার স্বপক্ষে প্রচুর তথ্যপ্রমাণ ছিল। তারপরও প্রশাসন স্রেফ হাত গুটিয়ে বসে থেকেছে বলে অভিযোগ করা হয়।
কেন হাত গুটিয়ে বসে ছিল প্রশাসন?
এমনটা দাবি করা হয় যে কেবলমাত্র তাঁদের গায়ে যাতে 'বর্ণবিদ্বেষী' তকমা না সাঁটানো হয়, তার জন্যই সেই সময় সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা দোষীদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেননি। কারণ, এই কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের অধিকাংশই আদতে ছিল পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত।
পরবর্তীতে (২০০৯ সালে) সরকারের তরফে কিছু পদক্ষেপ করা হলেও তা যথেষ্ট ছিল না বলেই অভিযোগ। উল্টোদিকে, যারা এই কেলেঙ্কারির শিকার হয়েছিল, তারা সারা জীবন একটি ট্রমার মধ্যে কাটাতে বাধ্য হয়।
পুরোনো সেই ঘটনা নিয়ে আবার নতুন করে জোর আলোচনা এবং সমালোচনা শুরু হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। বহু সাধারণ এক্স ইউজার যেমন মূল বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হচ্ছেন, তেমনই তাঁরা ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত দোষী ব্যক্তিদের পাশাপাশি তৎকালীন ব্রিটিশ প্রশাসন, পুলিশ ও সরকারের একাধিক হেভিওয়েটকেও কাঠগড়ায় তুলে তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপে করার দাবি করছেন।
প্রতিবাদে সরব হয়েছেন জে কে রাউলিং:
আমজনতার পাশাপাশি শুধু যে ইলন মাস্কই এ নিয়ে সরব হয়েছেন, তা নয়। প্রতিবাদী এই সেলেবদের তালিকায় রয়েছেন ব্রিটিশ লেখিকা জে কে রাউলিংও। তিনি সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন তৎকালীন পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। রাউলিংয়ের মতে, এই ঘটনায় পুলিশের অন্দরের দুর্নীতি সামনে চলে এসেছে।
বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করে রাউলিংয়ের প্রশ্ন, কেন এমন একটি চক্রকে 'গ্রুমিং গ্যাং' বলে অবিহিত করা হত, যারা কেবলমাত্র শিশু-কিশোরীদের সঙ্গবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে গিয়েছে?