এবারের মার্কিন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের নেপথ্যে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। এদিকে ট্রাম্পের কট্টর সমথক বিবেক রামাস্বামীও অনেক খেটেছেন ভোটের মরশুমে। এই আবহে এই দুই ব্যক্তিকে ট্রাম্পের প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখা যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছিল। আর সেই জল্পনা সত্যি করে বড় ঘোষণা করলেন ট্রাম্প। একটি বিবৃতি জারি করে ট্রাম্প জানান, তাঁর প্রশাসনে 'ডিপাটমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি'র প্রধান হবেন মাস্ক। সেই দফতরেই ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করবেন বিবেক রামাস্বামী। (আরও পড়ুন: 'পারমাণবিক শক্তিধর...', ভারতকে নিয়ে কী ভাবেন 'ট্রাম্পের NSA' মাইক ওয়াল্টজ?)
আরও পড়ুন: LAC চুক্তির পর লাদাখে প্রথম দফায় টহল ভারত-চিনের, কীভাবে এড়ানো হচ্ছে সংঘাত?
একদা ডেমোক্র্যাট ইলন মাস্ক এই নির্বাচনে রিপাবলিকানদের হয়েই প্রচার করেছেন। এমনকী ট্রাম্পের জন্যে জলের মতো টাকাও ঢেলেছেন বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প যে মাস্ককে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেবেন, তা এক প্রকার নিশ্চিত ছিল। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাঁর প্রশাসনের 'ডিপাটমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি'র কাজ হবে আমলাতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে, বিধিনিয়মের নাগপাশ কাটিয়ে, অযথা খরচ কমিয়ে, যুক্তরাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলির পুনর্নিমাণ করা। মাস্ক এবং বিবেককে নিয়ে ট্রাম্প নিজের বিবৃতিতে বলেন, 'আমেরিকার নাগরিকদের জীবনকে উন্নততর করে তুলতে ওঁরা যুক্তরাষ্ট্রীয় আমলাতন্ত্রে কী পরিবর্তন আনেন, তা দেখার জন্যে মুখিয়ে আছি আমি। একসঙ্গে মাস্ক এবং বিবেক আমেরিকার সরকারকে আবর্জনা মুক্ত করতে পারেন, জালিয়াতি মুক্ত করতে পারেন।' ট্রাম্প জানিয়েছেন, ট্রাম্প এবং বিবেকের এই দফতর বাইরে থেকে সরকারকে উপদেশ দেবে।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিবেক রামাস্বামী একটা সময় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রাইমারিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। পরে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার দৌড় থামিয়ে ট্রাম্পের হয়ে গলা ফাটান। ট্রাম্প জয়ী হওয়ায় এহেন বিবেক রামাস্বামীকে সেক্রেটারি অফ স্টেট করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। তবে তা হয়নি। রিপাবলিকান শিবিরে ক্রমেই গুরুত্ব বেড়েছ ৩৯ বছর বয়সি ব্যবসায়ী বিবেকের। একটা সময় তো এমনও মনে করা হয়েছিল যে হয়ত রামাস্বামীকেই ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী করতে পারেন ট্রাম্প। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেটাও হয়নি। তবে শেষ পর্যন্ত আশা অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হলেন রামাস্বামী।
উল্লেখ্য, বিবেক রামাস্বামীর শিকড় ভারতের কেরলে। অবশ্য তিনি বেড়ে উঠেছেন আমেরিকায়। বিবেকের মা-বাবা কেরলের বাসিন্দা ছিলেন। কর্মসূত্রে ভারত ছেড়ে আমেরিকা পাড়ি দিয়েছিলেন তাঁরা। ২০১৪ সালে বিবেক রোইভ্যান্ট সায়েন্স নামক প্রযুক্তি সংস্থা গঠন করেন। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে সবথেকে বড় আইপিও ছিল তাঁর। একাধিক রোগের চিকিৎসার জন্য সফল ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ও এফডিএ অনুমোদিত পণ্য তৈরির ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। ২০২২ সালেই তিনি নতুন আরও একটি হেলথকেয়ার ও টেকনোলজি কোম্পানি খোলেন। আর ২০২৩ সালে তিনি রিপাবলিকানদের হয়ে রাজনীতির ময়দানে পা রাখেন।