হিন্দিতে গালাগালি দিল। ২০২৩ সালে বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের জন্য রোহিত শর্মার একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলল। ওভারে অনেক রান ওঠার পরেও রোহিত যে শট মারতে গিয়ে আউট হয়ে গিয়েছিলেন, সেটাকে দায়িত্বজ্ঞানহীন বলল। আবার মহম্মদ সিরাজের পরিবর্তে মহম্মদ শামিকে নয়া বল দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘ট্যাকটিকাল ব্লান্ডার'-র (কৌশলগত ভুল) তকমা দিল। আমদাবাদের ঢিমেগতির পিচে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে যে খেলানো হয়নি, সেটাকেও বড় ভুল হিসেবে চিহ্নিত করল।
গ্রকের পিছনে কি কোনও মানুষ?
আর কোনও মানুষ নন, সেইসব কাণ্ড করল ইলন মাস্কের মালিকাধীন এক্সের (পূর্বতন টুইটার) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স) গ্রক। যা মাস্কের আমলে এক্সের অন্যতম পরিচিতি হয়ে উঠেছে। কিন্তু শনিবার গ্রকের থেকে যা যা উত্তর এল, তার জেরে হতভম্ব হয়ে গিয়েছেন ভারতীয় নেটিজেনরা। কেউ-কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘গ্রক সত্যিই আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স তো নাকি আদতে কোনও মানুষের কাজ এটা?’
হিন্দিতে গালিগালাজ গ্রকের, ভিমরি খেল নেটপাড়া
সেটার উত্তর এখনও মেলেনি। কিন্তু নেটপাড়ার যে ‘শক’ লেগেছে, তা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারছে না। আর সেটার সূত্রপাত শুরু হয় হিন্দি গালিগালাজ থেকে। '@TokaTakes' নামে এক নেটিজেন প্রশ্ন করেন, 'হাই গ্রক, আমার সেরা ১০ জন মিউচুয়াল বন্ধু কারা?' সেটার কোনও উত্তর না পেয়ে হিন্দিতে গালিগালাজ ব্যবহার করে পালটা টুইট করেন ওই নেটিজেন। ওই নেটিজেন যে হিন্দি গালিগালাজ ব্যবহার করেন, সেটা দিয়েই শনিবার সকালে গ্রকের তরফে বলা হয়েছে, 'চিল কর। তোর ১০ জন সেরা মিউচুয়াল বন্ধুর তালিকাটা দিলাম।'
আর সেটা দেখে হতবাক হয়ে যায় নেটপাড়া। অনেকে তো এক্স অ্যাকাউন্টে ঢুকে খতিয়ে দেখেন যে উত্তরটা সত্যিই গ্রকের তরফে দেওয়া হয়েছে তো। তাতে দেখা যায় যে গ্রকের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট থেকেই সেই উত্তর দেওয়া হয়েছে। তাতে নেটিজেনরা পুরোপুরি হতবাক হয়ে যান। কেউ-কেউ তো আবার পুরো ব্যাপারটায় মজা পেয়ে যান। তাঁরা নিজেদের খেয়াল খুশি মতো বিভিন্ন প্রশ্ন করতে থাকেন।
রোহিতের দায়িত্বজ্ঞানহীন শট….., বলল গ্রক
তেমনই এক নেটিজেন বলেন, 'হাই গ্রক, কেন ভারত ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে হেরে গিয়েছিল? আর সেই হারের জন্য কারা দায়ি?' সেটার জবাবে একেবারে কর্পোরেট স্টাইলে সাজানো-গোজানো উত্তর পান ওই নেটিজেন। কিন্তু তাতে তাঁর মন ভরেনি। হিন্দিতে তিনি বলেন, ‘এত সাজিয়ে-গুছিয়ে উত্তর দিতে হবে না। হারের জন্য কে কে দায়ি, সেটা বলে দাও।’
আর তাতেই যেন বিস্ফোরণ ঘটে। গ্রকের তরফে বলা হয়, 'হারের জন্য দায়ি হল দলগত ব্যর্থতা। রোহিত শর্মার দায়িত্বজ্ঞানহীন শট (ম্যাচের) একটি বড় টার্নিং পয়েন্ট ছিল। বোলিংয়ে শামির আগে সিরাজকে আনা ট্যাকটিকাল ব্লান্ডার ছিল (বিশ্বকাপে নয়া বলে বল করছিলেন সিরাজ)। অশ্বিনকে প্রথম একাদশে না রাখার সিদ্ধান্তও ভুল ছিল। (দ্বিতীয় ইনিংসে) পিচে যে পরিবর্তন হয়েছিল, সেটার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেনি। সকলেরই কিছু-কিছু ভুল ছিল। দলগত প্রচেষ্টায় ঘাটতি ছিল।'
তারইমধ্যে একটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে যে পুরোটার নেপথ্যে কি হ্যাকারদের হাত আছে? কারণ কয়েকদিন আগেই মাস্ক দাবি করেছিলেন যে 'বিশাল বড় সাইবার হানার' মুখে পড়েছে এক্স। আর হামলার ক্ষেত্রে যে আইপি (ইন্টারনেট প্রোটোকল) অ্যাড্রেস সামনে এসেছে, সেটার অবস্থান ইউক্রেনের কোথাও পাওয়া গিয়েছে। আর সেই সাইবার হানার কারণেই গ্রকের এরকম আচরণ কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।