বাংলাদেশে হিন্দু-সহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর যেভাবে লাগাতার অত্যাচার চালানো হচ্ছে, এবার তার প্রতিবাদে সরব হলেন ভারতীয় মুসলমানরা। বাংলাদেশে এহেন হিংসা বন্ধ করতে সরাসরি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসকে চিঠি পাঠালেন তাঁরা।
দ্য ইকোনমিক টাইমস-এ এই সংক্রান্ত যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, সেই অনুসারে, ভারতীয় নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে মহম্মদ ইউনুসকে।
যে ভারতীয়রা ওই নাগরিক গোষ্ঠীর সদস্য, তাঁদের অধিকাংশই ইসলাম ধর্মাবলম্বী এবং সমাজের বিশিষ্ট জন হিসাবে পরিচিত। তাঁরা তাঁদের চিঠিতে বাংলাদেশজুড়ে চলা বর্তমান অরাজকতার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, অবিলম্বে হিন্দু-সহ সমস্ত সংখ্যালঘুর সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার বন্ধ করতে হবে।
এর জন্য মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যাতে অবিলম্বে কঠোর পদক্ষেপ করে, চিঠিতে সেই দাবিও তুলেছেন ভারতীয় মুসলমানরা।
ওই চিঠিতে যেসব বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা স্বাক্ষর করেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন - প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এস ওয়াই কুরেশি, দিল্লির প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট গভর্নর নাজিব জং, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভিসি জামিরউদ্দিন শাহ, প্রাক্তন সাংসদ শাহিদ সিদ্দিকী এবং শিল্পপতি সইদ শেরবানি।
ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে যে ধরনের 'নৃশংস আচরণ' করা হচ্ছে, যেভাবে তাঁদের 'নিশানা' করা হচ্ছে, তাতে ভারতীয় মুসলমান সমাজ অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
'সিটিজেন্স ফর ফ্র্যাটারনিটি' নামক ওই নাগরিক গোষ্ঠীর তরফে চিঠিতে লেখা হয়েছে, 'মুসলিম হিসাবে আমরা এই ধরনের ইসলামবিরোধী আচরণ দেখে ব্যথিত ও হতাশ। এই আচরণ স্পষ্টতই ইসলামের নীতি এবং নবীর দেখানো পথের বিরোধী। আমরা সত্যিই আশা করি, বাংলাদেশের (বর্তমান অন্তর্বর্তী) সরকার সমস্ত সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কঠোরভাবে পদক্ষেপ করবে এবং দেশের হিন্দু জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি অন্য সংখ্যালঘুদেরও পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।...'
সংশ্লিষ্ট চিঠিতে আরও লেখা হয়েছে, '...আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এর নিন্দা করছি। এটি একটি কাপুরুষোচিত আচরণ। যা ইসলামকে অত্যন্ত নেতিবাচকভাবে তুলে ধরছে। যা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা প্রদানের নিশ্চয়তার গুরুত্বকে ক্ষুণ্ণ করছে। সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কীভাবে আচরণ করা হচ্ছে, সেটা (যেকোনও) গণতন্ত্রের কাছেই একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা।'
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বের সমস্ত সমাজেই জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা প্রদান করা বাঞ্ছনীয়। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন অনুসারে, মহম্মদ ইউনুসকে পাঠানো ওই চিঠি লেখা হয়েছে গত ৪ ডিসেম্বর।