প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আজকাল চরম উদ্বিগ্ন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ফ্রান্স নাকি গৃহযুদ্ধে আটকে যেতে পারে, দাঙ্গা আরও চরম আকার ধারণ করতে পারে, যার একটি আভাস ইতিমধ্যেই ফ্রান্সের অনেক শহরে দেখিয়েছিল বামপন্থীরা। এরপরই ম্যাক্রোঁ আহত সুরে বলেছেন, দেশের আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ডানপন্থী বা বামপন্থীরা জয়ী হলে দেশ 'গৃহযুদ্ধের' কবলে পড়তে পারে।
হঠাৎই এমনটা কেন বলেছেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ
ফ্রান্সে আরএন দলকে ডানপন্থী এবং নিউ পপুলার ফ্রন্টকে বামপন্থী বলা হয়। এবারের নির্বাচনে তাদের দুজনেরই জোট রয়েছে। এক্সিট পোলগুলি এই জোটের জয়ের ভাল সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছে। কিন্তু ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থী এবং উদারপন্থী দল রেনেসাঁর জয়ের সম্ভবনা বেশ কম। কারণেই সম্ভাব্য গৃহযুদ্ধের বিষয়ে ম্যাক্রোঁর বক্তব্য হালকাভাবে নিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। সংসদ নির্বাচনের আগে, জুনের শুরুতে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনে তাঁর ক্ষমতাসীন মধ্যপন্থী দলকে সেই জাতীয় সমাবেশের কাছে পরাজয়ের মুখে পড়তে হয়েছিল। এরপর ফ্রান্সে বামপন্থীরা যে ধরনের সহিংসতা সৃষ্টি করেছে তাতে এক ভীতিকর মুহূর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
এরপরই সম্প্রতি, ম্যাক্রোঁ ফ্রান্সের বিখ্যাত পডকাস্ট 'জেনারেশন ডু ইট ইওরসেলফ'-এ এই উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, নিউ পপুলার ফ্রন্ট কোয়ালিশন পার্টনার আরএন পার্টি এবং বামপন্থী ফ্রান্স আনবোড পার্টির নীতি বিভাজনমূলক। ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি বা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে তাঁরা দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে চান। এই নীতি নিয়ে দেশকে কখনওই নিরাপদ রাখতে পারবেন না। ম্যাক্রোঁর গৃহযুদ্ধের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে, আরএন প্রেসিডেন্ট জর্ডান বারডেলা উত্তর দিয়েছিলেন, একজন রাষ্ট্রপতির কখনওই এমনটি বলা উচিত নয়।
এদিকে কয়েক দিন আগেই বিখ্যাত আন্তর্জাতিক সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছিল, এবারের নির্বাচনে ম্যাক্রোঁর দল রেনেসাঁ ধাক্কা খেতে পারে। সম্ভবত সে কারণেই ম্যাক্রোঁ দেশটিকে এই ভয়ঙ্কর সম্ভাবনার বিষয়ে সতর্ক করেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনে তাঁর দলের পরাজয়ের পর তিনি প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের ঘোষণা করেছিলেন।
উল্লেখ্য, নির্বাচনে দ্বিতীয় দফার ভোট ৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এটি শুধুমাত্র সেইসব আসনেই এই ভোট হবে, যেখানে প্রথম দফার ভোটে কোনও প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাননি। এদিকে, গত সপ্তাহান্তে ফ্রান্সে পরিচালিত একটি সমীক্ষার ফলাফল দেখিয়েছে যে আরএন পার্টি এবং তার মিত্ররা ভোটের প্রথম রাউন্ডে ৩৫-৩৬ শতাংশ ভোট পাবে। নিউ পপুলার ফ্রন্ট ২৭-২৯.৫ শতাংশ ভোট পাবে। জরিপে আরও দাবি করা হয়েছে যে ম্যাক্রোঁর রেনেসাঁ ১৯.৫.-২২ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে থাকতে পারে।