কাশ্মীর উপত্যকার রাজনীতিকদের অভিযোগ, তিনি বিজেপির দালাল। অথচ, কারাগার থেকে 'মুক্ত' হতেই প্রধানমন্ত্রীকে মোদীকে নিশানা করে তাঁকে বাক্যবাণে বিদ্ধ করলেন বারামুল্লার সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার আবদুল রশিদ। পাঁচ বছরের বেশি বন্দি থাকার পর বুধবারই 'মুক্তি' পান তিনি।
জেল থেকে বেরিয়েই রশিদ দাবি করেন, লোকসভা নির্বাচনে তাঁর জয়ই প্রমাণ করে দিয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ মোটেও মোদীর নীতিতে খুশি নয়। বরং, নরেন্দ্র মোদীর সরকার যেভাবে উপত্যকা থেকে ধারা ৩৭০ এবং ৩৫এ প্রত্যাহার করে নিয়েছে, তাতে কাশ্মীরিরা ক্ষুব্ধ। একইসঙ্গে, প্রধানমন্ত্রীর 'নয়া কাশ্মীর গড়া'র নীতির বিরুদ্ধেও লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রশিদ।
উল্লেখ্য, প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর পর এদিন তিহাড় জেল থেকে 'মুক্তি' পান রশিদ। এরপরই তিনি বলেন, 'সাড়ে পাঁচ বছর কারাবাস করার পর আমার নিজেকে আরও শক্তিশালী মনে হচ্ছে এবং আমার লোকেদের জন্য গর্ব হচ্ছে।'
প্রসঙ্গত, সন্ত্রাসে মদত ও আর্থিক সহযোগিতা করার অভিযোগে ২০১৯ সালে রশিদকে গ্রেফতার করা হয়। সেই মামলায় মঙ্গলবার দিল্লির একটি আদালত থেকে জামিন পান তিনি। আগামী ২ অক্টোবর পর্যন্ত আদালত তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে। আসন্ন জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভা নির্বাচনের জন্য রশিদ যাতে প্রচার কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারেন, তার জন্যই এই ব্যবস্থা।
বুধবার কাশ্মীরের আমজনতার উদ্দেশে রশিদকে বলতে শোনা যায়, 'আমি প্রতিজ্ঞা করছি, আমি মানুষকে আশাহত করব না। আমি কথা দিচ্ছি, মোদী যে নয়া কাশ্মীর গড়ার ডাক দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাব। কারণ, মোদীর নয়া কাশ্মীরের ভাবনা ইতিমধ্যেই ডাহা ফেল করেছে। মানুষ তাঁর এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে। ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট তিনি যা করেছেন, মানুষ তাও প্রত্যাখ্যান করেছে। আমাকে ভোটে জেতানোর অর্থই হল, মোদীর নীতির বিরুদ্ধে, বিশেষ করে ধারা ৩৭০ ও ৩৫এ-র বিরুদ্ধে মতদান করা।'
কাশ্মীরের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা স্মরণ করে রশিদ আরও বলেন, 'আমি মানুষের সেবায় নিজেকে নিবেদন করেছি। কাশ্মীর সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানই আমার লক্ষ্য। আমি মোদীজিকে বলব, ভয় পাবেন না, আতঙ্কিত হবেন না। আমরাও ভয় পাব না।'
এদিকে, বিজেপি নেতারা ইতিমধ্যেই রশিদকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে নিশানা করতে শুরু করে দিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ তুলছেন। অন্যদিকে, কাশ্মীরের স্থানীয় রাজনীতিকরা বলছেন, রশিদ আসলে বিজেপির দালাল। রশিদ ও তাঁর দলকে একসুরে লাগাতার রাজনৈতিক আক্রমণ করে চলেছেন তিনজন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা এবং মেহবুবা মুফতি।