মেক্সিকো উপসাগরে স্পেসএক্সের নতুন স্টারশিপ রকেট ধ্বংস হওয়ার দৃশ্য বিশ্বজুড়ে জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। গত ২০ এপ্রিলের সেই ঘটনায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। রকেট বিস্ফোরণের প্রায় সপ্তাহ খানেক পর এবার সেদিকে নজর ঘোরালো মার্কিন প্রশাসন। এই বিস্ফোরণের জেরে আশেপাশের অঞ্চলের পরিবেশের ওপরে প্রভাব নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে যাচাই-বাছাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। দক্ষিণ টেক্সাসে গতসপ্তাহের বৃহস্পতিবার যে রকেট বিস্ফোরণ ঘটে তার জেরে কাছের একটি ছোট শহরের ওপর কংক্রিটের মেঘ দেখা গিয়েছিল। এই আবহে মার্কিন নিয়ন্ত্রকদের মনে এই ধরনের লঞ্চ অপারেশনের পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এদিকে স্পেসএক্সের যে লঞ্চ সাইট থেকে স্টারশিপ রকেটটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল, তার খুব কাছেই বোকা চিকা সমুদ্রতটে অবস্থিত একটি জাতীয় উদ্যান। সেখানেও কংক্রিট ও ধাতুর 'বৃষ্টি' হয়েছে রকেটটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায়। পাশাপাশি সেই জাতীয় উদ্যানের ৩.৫ একর জমি জুড়ে আগুনও ধরে যায়। তবে কোনও জীবের মৃত্যু হয়নি এই ঘটনায়। তবে পরিবেশবিদরা এখনও দাবি করছেন, বোকা চিকা থেকে ভবিষ্যতে আর কোও রকেট উৎক্ষেপণের অনুমতি দেওয়ার আগে এর পরিবেশগত প্রভাবের বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত। এদিকে বোকি চিকা জাতীয় উদ্যানের ক্ষতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে স্পেসএক্সের তরফে তাৎক্ষণিক ভাবে কোনও জবাব দেওয়া হয়নি।
এদিকে মাঝ আকাশে স্টারশিপ ধ্বংস হয়ে গেলেও স্পেসএক্স জানায়, তাদের চোখে এটা 'সাফল্য'। প্রথম চেষ্টাতেই রকেটটিকে টেকঅফ করানোর বিষয়টিকেই 'সাফল্য' হিসেবে দেখছে ইলন মাস্কের সংস্থা। তবে বোকা চিকা জাতীয় উদ্যানে রকেটের ধ্বংসাবশেষ পড়ার ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করেছে মার্কিন মৎস্য এবং বন্যপ্রাণী সার্ভিস। কোনও সরকারি প্রতিষ্ঠান এই প্রথম এই ধরনের রকেট লঞ্চের পরিবেশগত দিকটি তুলে ধরেছে খাতায় কলমে।
এদিকে স্পেসএক্সের স্টারশিপের ওপর নির্ভর করেই ফের চাঁদে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা করছে নাসা। উল্লেখ্য, স্টারশিপ আদতে পুনঃব্যবহারযোগ্য মহাকাশ যান। এর মাধ্যমে ক্রু এবং কার্গো উভয়কেই পৃথিবীর কক্ষপথ, চাঁদ এমনকি মঙ্গল গ্রহে পৌঁছে দেওয়া যাবে। এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী লঞ্চ ভেহিকেল বলে দাবি করা হচ্ছে স্পেসএক্সের তরফে। ইলন মাস্কের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল মঙ্গল গ্রহে বসতি স্থাপন করা। এর জন্যই স্টারশিপ প্রোজেক্টের ওপর এতটা জোর দেওয়া হচ্ছে। তবে মঙ্গলে বসতি গড়তে গিয়ে পৃথিবীর পরিবেশ নষ্ট হবে না তো?