এর আগে রাশিয়ায় পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু ভারতীয় সংস্থার বিরুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আমেরিকা। আর এবার, ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফেও ভারত সরকারের কাছে এই সংক্রান্ত তথ্য পাঠানো হল বলে দাবি করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
তাতে নাকি দাবি করা হয়েছে, এমন একাধিক ভারতীয় সংস্থা রয়েছে, যারা বিভিন্ন রুশ সংস্থার সঙ্গে বাণিজ্য করার সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের জারি করা নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেছেন।
উল্লেখ্য, ইউক্রেনের উপর রাশিয়া হামলা করার পরই পুতিনের দেশের উপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আন্তর্জাতিক মহল। আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফে এ নিয়ে পদক্ষেপ করা হয়। যদিও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরও মস্কোর সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেন অব্যাহতই রেখেছে নয়া দিল্লি। যার জন্য একাধিকবার ভারতকে মূলত পশ্চিমী দুনিয়ার সমালোচনার মুখেও পড়তে রয়েছে।
এহেন প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট সূত্র মারফত দাবি করা হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ভারতকে যে তথ্যাবলী পাঠানো হয়েছে, তা আসলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে তৃতীয় কোনও দেশের বর্তমান চুক্তির অধীনে সরবরাহ করা হয়েছে। যেখানে ইউক্রেনে হামলার প্রতিবাদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে জারি করা নিষেধাজ্ঞার ১৫তম প্যাকেজটি বাস্তবায়িত করার চূড়ান্ত প্রচেষ্টা করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি আধিকারিকরা বলছেন, গত অক্টোবর মাসে যখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি ডেভিড ও'সুল্লিভ্যান নয়া দিল্লিতে এসেছিলেন, সেই সময়েই ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে সংশ্লিষ্ট তথ্য়াবলী তুলে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, নিষেধাজ্ঞার এই ১৫তম প্যাকেজটিতে সেইসব পণ্যবাহী জাহাজের তালিকা থাকবে, যেগুলি মূলত - 'শ্যাডো ফ্লিট' বা 'ডার্ক ফ্লিট'-এর অংশ। এবং এই জাহাজগুলির মাধ্যমেই সারা বিশ্বে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করা হয়। এবং এখানে সেই সমস্ত সংস্থার তালিকাও থাকবে, যারা রাশিয়াকে 'যুদ্ধক্ষেত্রের সরঞ্জাম' সরবরাহ করেছে বা করছে।
সূত্রের দাবি, বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে ভারত। কিন্তু, তার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে আরও বেশি করে তথ্য চাওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ভারতীয় আধিকারিকদের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়, রাশিয়ার উপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা জারি করার ক্ষেত্রে সমমনোভাবাপন্ন দেশগুলির সঙ্গে কাজ করছে তারা।
এক্ষেত্রে 'কমন হাই প্রায়োরিটি স্য়াংশনড গুডস' (এমন পণ্য যেটা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের কাছেই অত্যন্ত জরুরি এবং যেগুলিকে আর রাশিয়ায় সরবরাহ করা হবে না) এবং 'যুদ্ধক্ষেত্রের পণ্যসমূহ' চিহ্নিত করা হয়েছে। স্থির করা হয়েছে, ওই বিশেষ পণ্যগুলি সংশ্লিষ্ট তৃতীয় পক্ষ আর রাশিয়ায় সরবরাহ করবে না।