বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > শীতের ধাক্কা সামলাতে প্রস্তুত হচ্ছে ইউরোপ

শীতের ধাক্কা সামলাতে প্রস্তুত হচ্ছে ইউরোপ

শীতের ধাক্কা সামলাতে প্রস্তুত হচ্ছে ইউরোপ। ছবি ডয়চে ভেলে

জার্মানির সরকার সংকটের শুরু থেকেই দ্রুত গতিতে গ্যাসের বিকল্প উৎসের সন্ধান শুরু করেছিল৷ ইউরোপের কিছু দেশ ছাড়াও কাতার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ থেকে এবএনজি বা তরল প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির প্রস্তুতি নিয়েছে বার্লিন৷

গ্যাস ও বিদ্যুতের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং জোগানের আশঙ্কায় ইউরোপে শীতের মাসগুলিতে সংকটের আশঙ্কা বাড়ছে৷ জাতীয় ও ইউরোপীয় স্তরে একাধিক উদ্যোগ সত্ত্বেও আশঙ্কা দূর হচ্ছে না৷ চলমান ইউক্রেন সংকটের কারণে চলতি বছরে শীতের মাসগুলি ইউরোপের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে চলেছে৷ প্রাকৃতিক গ্যাস-সহ সার্বিকভাবে জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিদ্যুতের বিল মেটানো ও ঘর গরম রাখা সাধারণ মানুষ ও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কঠিন হয়ে উঠছে৷

বিশেষ করে রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ কার্যত প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘাটতি মেটাতে হিমসিম খাচ্ছে ইউরোপের অনেক দেশ৷ উল্লেখ্য, ইউক্রেন সংকটের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের গ্যাসের চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ মেটাতো রাশিয়া৷ সরবরাহে বিঘ্নের জন্য মস্কো নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করলেও ইউরোপীয় দেশগুলি সে দেশের বিরুদ্ধে জ্বালানিকে হাতিয়ার করার অভিযোগ করছে৷ অবশ্য ইউরোপে গ্যাসের চাহিদার প্রায় ৮৫ শতাংশ আধারে জমা হওয়ায় কিছুটা স্বস্তির কারণ রয়েছে৷

জার্মানির সরকার সংকটের শুরু থেকেই দ্রুত গতিতে গ্যাসের বিকল্প উৎসের সন্ধান শুরু করেছিল৷ ইউরোপের কিছু দেশ ছাড়াও কাতার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ থেকে এবএনজি বা তরল প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির প্রস্তুতি নিয়েছে বার্লিন৷ সোমবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গেও সেই লক্ষ্যে এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে৷ তবে সেই গ্যাস গ্রহণ করার জন্য এলএনজি টার্মিনাল এখনো প্রস্তুত হয় নি৷ বর্তমানে চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশ গ্যাস জমা হবার ফলে জার্মানি কিছুটা নিশ্চিন্ত বোধ করছে৷

জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর ও অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী রোব্যার্ট হাবেক সোমবার জানিয়েছেন, দেশের উত্তর পশ্চিমে লুবমিনে একটি টার্মিনালের কাজ প্রায় শেষ হতে চলেছে৷ ডিসেম্বর মাসেই সেখানে জাহাজে করে এলএনজি বোঝাই জাহাজ নোঙর করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ আরও কয়েকটি টার্মিনাল নির্মাণের কাজও দ্রুতগতিতে চলছে৷ হাবেক বলেন, সবকিছু ঠিকমতো চললে, জ্বালানি সাশ্রয়ের মাত্রা ভালো থাকলে এবং আবহাওয়ার ক্ষেত্রে ভাগ্য প্রসন্ন হলে শীতের মাসগুলিতে জার্মানিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়৷ হাবেক আরও বলেন, সরকার প্রয়োজনে জ্বালানি কোম্পানিগুলিকে আর্থিক সহায়তা দিতেও প্রস্তুত৷

জ্বালানি সংকটের জের ধরে ইইউ সদস্য দেশগুলির মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতাও বাড়ছে৷ এর আওতায় আগামী ১০ অক্টোবর থেকে ফ্রান্সের একটি সংস্থা জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ শুরু করবে বলে জানিয়েছে৷ তবে পরমাণু চুল্লিগুলির চলমান সমস্যার কারণে ফ্রান্সেও শীতকালে বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে৷ তবে সে দেশে সাধারণ মানুষের জন্য গ্যাসের অভাব হবে না বলে আশ্বাস দিচ্ছে সিআরই নামের জ্বালানি কোম্পানি৷

স্পেনের শিল্পমন্ত্রী রাইয়েস মারোতো জানিয়েছেন, যে সব শিল্পক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ জ্বালানির প্রয়োজন হয়, ঘাটতি দেখা দিলে শীতকালে সেগুলি বন্ধ রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷ সেই সব কোম্পানিকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন৷

 ফিনল্যান্ডের গ্রিড কোম্পানি ফিনগ্রিড বিদ্যুৎ ঘাটতির আশঙ্কা জানিয়ে জনসাধারণকে সতর্ক করে দিয়েছে৷ পর্তুগসে দেশের এক বিদ্যুৎ কোম্পানি বিদ্যুতের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা সামলাতে নাপেরে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছে৷ পর্তুগালের সরকারও কোনো রাখঢাক না করে জানিয়েছে, যে সে দেশ শীতকালে কঠিন সময়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে৷ সে দেশের পরিবেশমন্ত্রী দুয়ার্তে কর্দেইরো অবশ্য ইউরোপীয় স্তরে গ্যাস কেনার সার্বিক উদ্যোগ সম্পর্কে আশা প্রকাশ করেন৷

(বিশেষ দ্রষ্টব্য: প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)

বন্ধ করুন