জম্মু ও কাশ্মীর এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্যদের বড় অংশ অন্ততপক্ষে ৬টি ক্ষেত্রে আপত্তি জানিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রস্তাব পাঠাতে চলেছেন।
ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের আপত্তির বিষয়ে অবশ্য এখনই মুখ খুলতে নারাজ বিদেশ মন্ত্রক, কারণ তার প্রভাব পড়তে পারে ভারত ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পারস্পরিক সম্পর্কে।
প্রশাসনিক সূত্র জানিয়েছে, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের কয়েকজন সদস্য সিএএ-এর বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে খসড়া প্রস্তাব আনতে চাইছেন। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন একান্তই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তা ছাড়া, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এই আইন পাশ করাতে সংসদের দুই কক্ষেই বিতর্ক হয়েছে।’
জানা গিয়েছে, আগামী ২৯ জানুয়ারি ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের প্লেনারি অধিবেশনে সংশ্লিষ্ট খসড়া প্রস্তাবগুলি (নম্বর B9-0077/2020 থেকে B9-0082/2020 পর্যন্ত) আলোচনার জন্য পেশ করা হবে এবং ৩০ জানুয়ারি তার উপর ভোটাভুটি হবে।
প্লেনারি অধিবেশনের প্রকাশিত নির্ঘণ্টে বলা হয়েছে, শুরুতে ইউরোপিয়ান কমিশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট তথা ইউনিয়নের বিদেশনীতি ও নিরাপত্তা দফতরের শীর্ষস্থানীয় আধিকারিক জোসেফ বোরেল ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সম্পর্কে বিবৃতি পাঠ করবেন।
এর আগে, জম্মু ও কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আলোচনায় বসেছিল ইউনিয়ন, তবে তার জেরে ভোটাভুটি হয়নি। গত বছরের অক্টোবর মাসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ২২ জন সাংসদের দিল্লি ও শ্রীনগর সফরের ব্যবস্থা করে দিল্লি। তবে কার্যক্ষেত্রে তা ইউনিয়নকে বিশেষ প্রভাবিত করতে পারেনি বলেই মনে হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের মোট ৭৫১ জন সদস্যের মধ্যে ৬২৬ জন সদস্য সংবলিত ৬টি ভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠীর তরফে সিএএ-এর বিরুদ্ধে ১২টি ক্ষেত্রে আপত্তিজনক প্রস্তাব আনতে চলেছেন।
জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের সুবাদে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতি লঙ্ঘন, উত্তর প্রদেশে সিএএ বিরোধীর উপরে পুলিশের গুলি চালনা, গ্রেফতারের পরে আটক প্রতিবাদীদের উপরে নিগ্রহ এবং এনআরসি-এর দ্বারা বিশ্বের বৃহত্তম রাষ্ট্রহীনতার সমস্যা তৈরি করার অভিযোগে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে নালিশ জানাতে পারে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন।
সূত্রের খবর, রাইসিনা আলোচনা সম্মেলনে এসে বিষয়গুলি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিদেশষমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে কথা হয় বোরেলের।