বছরের শুরুর দিকেই হালকা মন্দা পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে পারে ইউরো ব্যবহারকারী ২০টি দেশ। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে উপভোক্তাদের ব্যয় সংকোচ এবং সরকারের খরচে রাশ টানার প্রচেষ্টার প্রভাব পড়তে পারে এই দেশগুলিতে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক সংশোধিত সরকারি তথ্যানুসারে, বছরের প্রথম তিন মাসে, ইউরোজোনে অর্থনৈতিক উৎপাদন আগের ত্রৈমাসিকের তুলনায় ০.১% কমেছে। ২০২২ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিকেও আউটপুট ০.১% হ্রাস পেয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী এমনটাই উঠে এসেছে। আরও পড়ুন: ভাল পারফর্ম করলে ১৫% পর্যন্ত হাইক! মুখে হাসি ফুটতে চলেছে TCS কর্মীদের
কিন্তু ঠিক কখন বলা যেতে পারে যে মন্দা হয়েছে?
সাধারণত, পর পর দুইটি ত্রৈমাসিক জুড়ে কোনও দেশের অর্থনৈতিক সংকোচন হয়, তখনই তাকে মন্দা বলে উল্লেখ করা হয়।
বৃহত্তর ইউরোপীয় অর্থনীতিতে অবশ্য এই মন্দার প্রভাব পড়বে না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন জুড়ে, গত বছরের শেষের দিকে ০.২% জিডিপি পতন হয়। এরপর প্রথম ত্রৈমাসিকে জিডিপি ০.১% বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইউরোজোনের তথ্য সম্পর্কে ক্যাপিটাল ইকোনমিক্সের প্রধান ইউরোপীয় অর্থনীতিবিদ অ্যান্ড্রু কেনিংহাম বলেন, উচ্চ মূল্য এবং ক্রমবর্ধমান সুদের হারের কারণে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির দৈনন্দিন খরচে প্রভাব পড়েছে।
কিন্তু পিকটেট ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের সামগ্রিক অর্থনৈতিক গবেষণার প্রধান ফ্রেডেরিক ডুক্রোজেটের টুইট অনুসারে, মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করে হিসাব করলে দেখা যাবে, এই আয় হ্রাসের ধাক্কা আরও ভয়ানক হতে পারে।
রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতি
ইউরোজোনে গত বছর লাফিয়ে লাফিয়ে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলার পর থেকে জ্বালানির দাম বেড়ে গিয়েছে। মে মাসে সামগ্রিক ভোক্তা মূল্য এক বছর আগের তুলনায় ৬.১% বেড়ে গিয়েছে। সরকারের ব্যয়ও ক্রমাগত হারে হ্রাস পেয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে জিডিপি হ্রাসের পিছনে এটিও একটি কারণ হিসাবে মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার যদিও নয়া পূর্বাভাসে বিষয়টি উল্টে যায়। দেখা যাচ্ছে মূলত ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতি জার্মানি এবং আয়ারল্যান্ডের কারণে আয়ের পূর্বাভাস হ্রাস পেয়ে যাচ্ছে। প্যানথিয়ন ম্যাক্রো ইকোনমিক্সের প্রধান ইউরোজোন অর্থনীতিবিদ ক্লজ ভিস্টেসেন এমনটাই উল্লেখ করেছেন।
২০২৩ সালের প্রথম তিন মাসে জার্মানির জিডিপি ০.৩% হ্রাস পেয়েছে। আগের শূন্য বৃদ্ধির অনুমান করা হয়েছিল। তবে গত বছরের জ্বালানি মূল্যের ধাক্কার কারণে উপভোক্তাদের ব্যয়ে প্রভাব পড়ছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। আরও পড়ুন: IT সেক্টরে মন্দার আবহ, চলতি বছর প্রায় ৪০% কমছে ক্যাম্পাস নিয়োগ
ইউরোজোনে আসন্ন মন্দা নিয়ে ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির দুশ্চিন্তা বাড়তে চলেছে। তাদের মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা আরও জটিল হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। আপাতত সুদের নয়া হার নির্ধারণের জন্য আগামী সপ্তাহে ইউরোপীয়ান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের বৈঠক হওয়ার কথা। মুদ্রাস্ফীতি এখনও ব্যাঙ্কের লক্ষ্যমাত্রার তিনগুণেরও বেশি উপরে রয়েছে। তবে এখন অবস্থা এমনই যে, সুদের হার আরও বাড়ানো হলে উল্টে অর্থনীতিতে ক্ষতি বাড়তে পারে।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup