চকোলেট, গোলাপ, ডিনার-ডেটের ভ্যালেন্টাইন্স ডে। তারই মাঝে এক অন্য ভালবাসার গল্প। স্ত্রীর মৃত্যুর পর ৩২ বছর ধরে তাঁর স্মৃতি আঁকড়ে বৃদ্ধ। তাঁর জীবনই যেন মনে করিয়ে দেয়, ভালবাসা শুধুমাত্র কোনও আবেগ নয়। সব কিছুর উর্ধ্বে, অব্যক্ত এক অনুভূতি এটি।
বছর ৯০ ওই বৃদ্ধের নাম ভোলানাথ অলোক। বিহারের পূর্ণিয়ার বাসিন্দা। গত ৩২ বছর ধরে স্ত্রীর অস্থি সঙ্গে রাখেন তিনি। ভোলানাথের শেষ ইচ্ছা হল, তাঁর মৃত্যুর পর যেন সেই অস্থির সঙ্গেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
পূর্ণিয়ার সিপাহী টোলা এলাকায় তাঁর বাড়ি। উঠোনে একটি আম গাছে স্ত্রীর অস্থি ঝুলিয়ে রেখেছেন তিনি।
বিবাহিত জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তগুলো আজও মনে রেখেছেন ভোলানাথ। আবেগাপ্লুত হয়ে তিনি বললেন, 'একদিন রাতে, আমার স্ত্রী বলেছিল, আমার পাশে ঘুমাও, আমি একজন স্ত্রী হিসাবেই মরতে চাই। তখন বুঝতে পারিনি কেন সে এমন কথা বলছে। আমি বললাম, কখনই এমনটা হবে না। দুজনে একসঙ্গে বাঁচব আর একসঙ্গে মরব। কিন্তু সকালে যখন চোখ খুললাম, সে পৃথিবীকে বিদায় জানিয়েছিল।'
'স্ত্রীর মৃত্যুর পর আমার পৃথিবীটা এক লহমায় বদলে গিয়েছিল। কিন্তু আমাদের সন্তানরা ছিল। তার জন্যই বাঁচতে হয়েছিল। তারপর থেকে আমি আমার স্ত্রীর অস্থি বিসর্জন করিনি। গত ৩২ বছর ধরে এটি আমার কাছে রেখেছি। আমি আমার সন্তানদের বলেছি, আমার মৃত্যুর পর আমার বুকে 'পোটলি' রেখে আমার শেষকৃত্য করতে। আমি স্ত্রীর সঙ্গে থাকতে পারিনি। কিন্তু আমরা একসঙ্গে যাব। যদি আমাদের আবার দেখা হয়! আমি তাকে বলব যে, আমি আমার প্রতিশ্রুতি রেখেছি,' এক নাগাড়ে বলে গেলেন ভোলানাথ। তাঁর দু'চোখ ভরা জল।
ভোলানাথের জামাই অশোক সিং বলেন, এটি ভালবাসার এক অনন্য উদাহরণ। আমরা অবশ্যই তাঁর শেষ ইচ্ছা পূরণ করব। আমরা সবাই তাঁর স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি। আজকের তরুণ প্রজন্মর এর থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত্।