সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশের সীমা মোটেও শেষ কথা নয়। আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের পক্ষে সওয়াল করে সুপ্রিম কোর্টে এমনই জানালেন অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপাল। বিশেষজ্ঞদের মতে, কেন্দ্র যে অবস্থান নিয়েছে, তা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে।
অ্যাটর্নি জেনারেল সওয়াল করেন, ভারতকে ভারতকে সার্বভৌম, সামাজিক, ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে উল্লেখ করে সংবিধানের প্রস্তাবনায় আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির ক্ষমতায়নের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। যে কাজটা শিক্ষাগত প্রতিষ্ঠান, সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণের মাধ্যমে করা যায়। সেইসঙ্গে সমাজের দুর্বল শ্রেণির মানুষের ক্ষমতায়নের জন্য একগুচ্ছ জনকল্যাণমূলক পদক্ষেপ করা যায় বলে শীর্ষ আদালতে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।
সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ সর্বোচ্চ সীমা
১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ভিত্তিতে আপাতত রাজ্যগুলি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশের সীমা অতিক্রম করতে পারে না। মণ্ডল কমিশন মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, কয়েকটি অভাবনীয় পরিস্থিতি ছাড়া ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের সীমা অতিক্রম করা যাবে না। সেই প্রেক্ষিতে আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। তাতে দাবি করা হয়, আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের ফলে সুপ্রিম কোর্টের ১৯৯২ সালের রায় লঙ্ঘিত হচ্ছে। সেইসঙ্গে শুধুমাত্র আর্থিক কারণে কাউকে পিছিয়ে পড়া শ্রেণি বলে বিবেচনা করা যায় না।
আরও পড়ুন: মহিলা সংরক্ষণ বিল কি আবার ফেরত আনা হবে? কেন্দ্রের কাছে জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট
আর্থিকভাবে দুর্বলদের জন্য ১০% সংরক্ষণ বৈধ? ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুনানি
আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ কি সাংবিধানিকভাবে বৈধ? আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ সেই মামলা শুনবে। পাঁচদিনের মধ্যে শুনানি-পর্ব শেষ করার লক্ষ্য নিয়েছে শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ।
সেই সাংবিধানিক বেঞ্চে আছেন ভারতের প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিত, বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী, বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাট, বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী এবং বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা। তারইমধ্যে ভারতের প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, মসৃণভাবে মামলার শুনানির জন্য আগামী বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি ফের নথিভুক্ত করা হয়েছে। মূল বিষয়টির শুনানি শুরু হবে ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে। তার ফলে হাতে পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাবে।
সংবিধানের ১০৩ তম সংশোধনীকে চ্যালেঞ্জ করে যে মামলা দায়ের হয়েছিল, তা ২০২০ সালের অগস্ট পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের কাছে পাঠিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ। সংবিধানের ১০৩ তম সংশোধনীর মাধ্যমে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের নিয়ম চালু করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: Supreme Court on Job Reservations: সংরক্ষণের জন্য শিক্ষায় আপোস নয়, বড় পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের
২০১৯ সালে সংবিধানের ১০৩ তম সংশোধনীকে (তফসিলি জাতি ও উপজাতি-সহ সমাজের অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির নাগরিক ছাড়া সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি চাকরিতে আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণির মানুষদের ১০ শতাংশ সংরক্ষণ) চ্যালেঞ্জ করে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জনহিত অভিযান, ইউথ ফর ইক্যুইলিটি-সহ অনেকে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করেছিল।