বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনায় ভারতে সরব হয়েছেন অনেকেই। এই আবহে এবার বাংলাদেশ ভেঙে বাঙালি হিন্দুদের জন্যে এক পৃথক 'হিন্দুদেশ' তৈরির 'ফর্মুলা' দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলেন প্রাক্তন সেনা কর্তা জেনারেল জিডি বক্সি। তিনি সেই পোস্টে একটি ছবি আপলোড করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের মানচিত্রের উত্তর দিক দিয়ে একটি কালো রেখা আঁকা। বাংলাদেশের উত্তর অংশকে সেখানে একটি পৃথক দেশ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। তার নাম - 'হিন্দুদেশ'। মূলত রংপুর, দিনাজপুর এলাকা নিয়ে সেই 'পৃথক দেশ' গঠনের ফর্মুলা দিয়েছেন অবরপ্রাপ্ত এই মেজর জেনারেল। (আরও পড়ুন: '...গুজরাট ২০০২-এর মোদীকে ফেরত চাই', বাংলাদেশ নিয়ে এ কী বললেন তথাগত?)
আরও পড়ুন: '…কী হল এত আন্দোলন করে?', উপনির্বাচনের ফল নিয়ে মুখ খুলল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট
জিডি বক্সি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখেন, 'মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ উগ্র জিহাদিবাদে পরিণত হয়েছে। তারা গণহত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশি হিন্দু সংখ্যালঘুদের তাড়িয়ে দিতে চায়। তারা মনে হয় লড়াইয়ের জন্য মুখিয়ে আছে। ১৯৭১ সালে ৩৮০০ জনেরও বেশি ভারতীয় সৈন্য, নাবিক এবং বায়ুসেনার যোদ্ধারা এই দেশকে ঘাতক পাকবাহিনীর হাত থেকে মুক্ত করতে তাঁদের জীবন দিয়েছিলেন। কতটা অকৃতজ্ঞ হতে পারে কেউ। যদি তারা হিন্দু সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার অব্যাহত রাখে তবে এটি একটি সম্ভাব্য সমাধান।' এরপরই বাংলাদেশ ভাগের সেই ছবিটি আপলোড করা হয়েছে। এর আগে একটা সময়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে বহু বাংলাদেশি ভারত ভেঙে দেওয়ার দাবিতে পোস্ট করেছিলেন। তাঁদের কথায়, উত্তরপূর্ব ভারত নাকি বাংলাদেশের অংশ। আবার বাংলাদেশের নাম করা প্রফেসর অসমের বিচ্ছিনতাবাদীদের সাহায্য করার জন্যে দাবি জানিয়েছিলেন। এবার ভারতের অবসরপ্রাপ্ত এক সেনা কর্তার বক্তব্য - দেশ তৈরি করতে পারলে, দেশ ভাঙতেও পারি। (আরও পড়ুন: 'আশা করি কেন্দ্র-রাজ্য…', মণিপুর হিংসা নিয়ে মুখ খুললেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক)
উল্লেখ্য, ভারতের সঙ্গে কয়েক মাস আগে পর্যন্ত ভালো সম্পর্ক ছিল বাংলাদেশের। তবে শেখ হাসিনা সেই দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকেই ক্রমে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কে চিড় ধরেছে। এদিকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। বরং সাম্প্রদায়িক হিংসার আগুনে মাঝে মাঝেই আক্রান্ত হচ্ছেন সেখানকার সংখ্যালঘু, হিন্দু, বৌদ্ধরা। তবে সেই স সমস্যা না মিটিয়ে মহম্মদ ইউনুসের সরকার এখন ব্যস্ত বাংলাদেশের ইতিহাস মুছতে। বাংলাদেশের জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি মুছে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা চলছে সরকারি ভাবে। আওয়ামি লিগকেও ধুয়ে মুছে সাফ করে দিতে চায় বর্তমানের ক্ষমতাসীনরা। (আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলা, গর্জে উঠলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা)
এদিকে বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠে আসছে। হাসিনার বিদায়ের পর থেকেই মন্দির থেকে শুরু করে হিন্দুদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চলেছে। সেই সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা থেকে বিএনপি-জামাত দেখেছিল 'আওয়ামি লিগের ষড়যন্ত্র'। তবে কয়েক মাস যাওয়র পর সেই দেশে হিন্দুদের অবস্থা যেন আরও খারাপ। ধর্মের নামে চাকরি থেকে জোর করে পদত্যাগ করানো হচ্ছে সংখ্যালঘুদের। অনেককে ধর্মান্তরিত করানোর অভিযোগও উঠেছে। এরই মাঝে চট্টগ্রামে হিন্দু এবং বৌদ্ধদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সংখ্যালঘু অত্যাচারে সেখানে অভিযুক্ত খোদ সেনা। হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর গ্রেফতারি ঘিরে আরও উত্তাল হয় পরিস্থিতি। এদিকে সেখানে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বাংলাদেশের কট্টরপন্থীরা পথে নেমেছে। 'জুলাই বিল্পবের' ছাত্র নেতারাও ইসকনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। একদিন আগেই আবার সুনামগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।