নজিরবিহীন নির্দেশ দিল তেলাঙ্গানা হাইকোর্ট। রাজ্যের প্রাক্তন বিআরএস বিধায়ক চেন্নামানেনি রমেশের ভারতীয় নাগরিকত্ব কেড়ে কেড়ে নিল আদালত। একইসঙ্গে প্রাক্তন বিধায়ককে জার্মান নাগরিক ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি নাগরিকত্ব গোপন করা এবং বিচার বিভাগকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগের জন্য প্রাক্তন বিধায়কের কাছে ৩০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, এটিই ভারতের প্রথম কোনও ঘটনা যেখানে প্রাক্তন কোনও বিধায়ক নাগরিকত্ব হারালেন।
আরও পড়ুন: সিএএ-র অধীনে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেলেন আরও ৫ শরণার্থী, কর্ণাটকে প্রথম
২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার রমেশের ভারতীয় নাগরিকত্ব বাতিল করেছিল। তারপরেই কেন্দ্রের নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রমেশ।হাইকোর্ট রমেশের ভারতীয় নাগরিকত্ব বাতিল করার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সিদ্ধান্তকে বহাল রেখেছে এবং তাঁকে জার্মান নাগরিক বলে ঘোষণা করেছে। তাঁর নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কংগ্রেস। দলের তরফে ভি রোহিত মামলা করেন। তাঁর আইনজীবী যুক্তি দিয়েছিলেন, যে রমেশ জার্মানিতে স্থায়ী হওয়ার পরে ১৯৯০-এর দশকে একজন জার্মান নাগরিক হিসাবে পরিচয় ধারণ করেছিলেন।
জানা যায়, সেখানে তিনি কাজ করতেন এবং বিয়ে করার পর সেখানেই সংসার গড়ে তোলেন। পরে ২০০৮ সালে তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ব পান। ২০০৯ সালে তিনি ভেমুলাওয়াড়া থেকে প্রথমবার নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর টানা চারবার সেখান থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, যে ২০০৮ সালে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়া সত্ত্বেও রমেশ তাঁর জার্মান পাসপোর্ট এবং নাগরিকত্ব ধরে রেখেছিলেন। কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে যে রমেশ তার জার্মান নাগরিকত্ব বাতিল না করেই ২০০৯ সালে ভারতে থাকার বিষয়ে বিবরণ ভুলভাবে উপস্থাপন করেছিলেন। বিধায়ক হিসাবে রমেশের নির্বাচনকেও চ্যালেঞ্জ করেছিল কংগ্রেস।
কেন্দ্রীয় সরকার আগেই হাইকোর্টকে জানিয়েছিল, যে রমেশের জার্মান পাসপোর্ট রয়েছে, যা ২০৩৩ সাল পর্যন্ত পুনর্নবীকরণ করা হয়েছে এবং তিনি ২০২৩ সালে তিনবার জার্মানি সফর করেছিলেন। ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রমেশের ভারতীয় নাগরিকত্ব বাতিল করার একটি আদেশ জারি করেছিল। কারণ তিনি এর জন্য আবেদন করার সময় তথ্য গোপন করেছিলেন। ভারতে দ্বৈত নাগরিকত্বের কোনও বিধান নেই। জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুসারে, ভারতীয় নাগরিক নন এমন কোনও ব্যক্তি কোনও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা ভোট দেওয়ার যোগ্য নন।