বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই চরম অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি পাকিস্তান। সেদেশে বেকারত্বের হারও আকাশ ছোঁয়া। এই আবহে সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে মুখিয়ে হাজার হাজার যুবক। এই আবহে পাকিস্তানে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের পরীক্ষা দিতে করাচির স্টেডিয়ামে পৌঁছায় ৩২ হাজার চাকরিপ্রার্থী। জানা গিয়েছে, গত শনিবার ইসলামাবাদ স্পোর্টস কমপ্লেক্সে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ১৬৬৭টি শূন্যপদের জন্য আবেদন জানিয়ে এই ৩২ হাজার কর্মী লিখিত পরীক্ষী দিতে এসেছিলেন। খোলা স্টেডিয়ামে বসে তারা পরীক্ষা দেয়। রোদের মধ্যে চোখ ঢেকে পরীক্ষা দিতে দেখা যায় হাজার হাজার যুবক-যুবতীকে।
বিগত পাঁচ বছর ধরে ফাঁকা পড়ে ছিল ইসলামাবাদ পুলিশের এই ১৬৬৭টি পদ। এই আবহে চাকরির পরীক্ষার বিজ্ঞাপন দেওয়া হলে গোটা দেশ থেকে চাকরিপ্রার্থীরা আসেন পরীক্ষা দিতে। ২০২২ সালে পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিক্স (PIDE) দ্বারা প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুসারে, দেশের যুব সমাজের ৩১ শতাংশেরও বেশি বর্তমানে বেকার। এর মধ্যে, ৫১ শতাংশ মহিলা এবং ১৬ শতাংশ পুরুষ। বেকারদের মধ্যে অনেকের কাছেই পেশাদার ডিগ্রি রয়েছে। পাকিস্তানের জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ ৩০ বছরের কম বয়সি। সেখানে বর্তমান বেকারত্বের হার ৬.৯ শতাংশ।
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা বেশ করুণ। সে দেশের কোষাগার শুকিয়ে যাচ্ছে। অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৫.৩ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে সেই দেশে। রান্নার গ্যাস ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের সংকটে ভুগছে সেদেশের নাগরিকরা। এদিকে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতার বিষয়টি এই সংকটে ইন্ধন জুগিয়েছে। এরই মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বন্যায় ভুগেছে পাকিস্তান। যাতে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে সেই দেশে। এই আবহে আইএমএফ সহ বহু আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং দেশ পাকিস্তানকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে। তবে আইএমএফ এক শর্তে সাহায্য করার প্রস্তাব দিয়েছে। ১.২ বিলিয়ন ডলার পাকিস্তানের হাতে তুলে দিয়ে আইএমএফ জানিয়েছে, অর্থ মন্ত্রক এবং ফেডারেল বোর্ড অফ রিজার্ভের কাজে খুশি নয় তারা। এখনও পর্যন্ত পাকিস্তান মোট ৭ বিলিয়ন ডলা ঋণ নিয়েছে আইএমএফ থেকে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের মতে, আর্থিক সংকট থেকে নিজেকে বের করে আনতে পাকিস্তানকে যে ঋণ দেওয়া হয়েছে, তার নবম পর্যালোচনা বৈঠকের আগে আইএমএফ পাকিস্তানকে তাদের ব্যয় কমানোর পরামর্শ দিয়েছে।