শস্যের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে এবার অভিনব প্রতিবাদে সামিল হলেন বিহারের কৃষকেরা। টমেটোর উপর দিয়ে চালিয়ে দিলেন ট্রাক্টর। নষ্ট করে দিলেন বিঘার পর বিঘা ফসল। এই ঘটনায় জমিতে লাগানো লক্ষাধিক টাকার টমেটো-সহ প্রচুর শাক সবজি নষ্ট হয়ে গিয়েছে।কৃষকদের দাবি, তাঁরা ৫০ বিঘা জমির ওপর লাগানো প্রায় লক্ষাধিক টাকার ফসল নষ্ট করে দিয়েছেন।
কৃষকদের অভিযোগ, উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না তাঁরা। সেকারণে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। সেই বিপুল ক্ষতি আর কোনও দিনও পূরণও হচ্ছে না। গঞ্জ বাজার ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার কৃষকদের আরও দাবি, তাঁদের উৎপাদিত টমেটোর প্রতি কিলো এক টাকাও উঠছে না। এমনকী অন্যান্য শাক-সবজি দু'টাকা কেজি দরেরও কম দামে কেনা হচ্ছে। শস্য পচনশীল হওয়ায় বাধ্য হয়ে তাঁদের কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। অথচ বাজার পর্যন্ত ওই ফসল আনার নিয়ে আসার খরচই চার থেকে পাঁচ টাকা প্রতি কিলো পড়ছে। ফলে, বাড়তি খরচ নিজেদের পকেট থেকেই গুনতে হচ্ছে তাঁদের।
নিজের উৎপাদিত দু'লাখ টাকা টমেটোর ক্ষতি করা এক কৃষক শম্ভু প্রসাদ বলেন, ‘টমেটো চাষ করতে আমি প্রতি বিঘা ১৫,০০০ টাকা খরচ করেছিলাম, এখন বিঘা প্রতি ৫,০০০ টাকাও দাম পাচ্ছি না। আমাদের প্রতি কিলো ১ টাকারও কম দরে ফসল বিক্রি করতে বাধ্য করা হচ্ছে। মিনাপুর ব্লকের আরও কৃষক রাজেন্দ্র প্রসাদ বলেন, ‘গঞ্জ বাজার উত্তর বিহারের অন্যতম বৃহত্তম সবজি-উৎপাদন ও বিপণনের জায়গা ছিল। প্রতিদিন আমরা এখান থেকে বিভিন্ন জায়গায় ২০ থেকে ২৫ টি করে টমেটোর ট্রাক পাঠাতাম। তবে এখন সেই সংখ্যা দিনে দুই থেকে তিনটি ট্রাকের মতো দাঁড়িয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘১০ বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করতে গেলে আনুমানিক খরচ প্রায় ২ লাখ টাকা।’ আরও এক কৃষক সঞ্জয় সাহ বলেন, ‘আমি প্রায় ১০ বিঘা জমিতে উৎপাদিত টমেটোর ফলন ধ্বংস করার কথা ভাবছিলাম। তিনি বলেন, ‘আমি স্বপ্নেও কখনও ভাবিনি যে, আমি নিজের হাতে আমার উৎপাদিত ফসল কখনও ধ্বংস করে ফেলব।’ প্রসঙ্গত, মুজফফরপুরে টমেটো ও শাকসবজির চাহিদা এই ঘাটতি মূলত বিভিন্ন রাজ্যের ব্যবসায়ীদের স্টক গ্রহণ বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি লকডাউন ও পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞার কারণে হয়েছে বলে মনে করছেন কৃষকেরা।