১০ টাকা মূল্যের দু'টি অতি সাধারণ ভারতীয় নোট, তার দাম এখন নাকি ২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। ২৯ মে লন্ডনে হবে এর নিলাম। লন্ডনের নুনানস মেফেয়ার নিলাম হাউসে আয়োজন করা হয়েছে এই নিলাম ইভেন্টের। জানা গিয়েছে, ১০৬ বছর আগে ডুবে যাওয়া একটি জাহাজ থেকে পাওয়া গিয়েছে এই দু'টি ভারতীয় ১০ টাকার নোট।
- কেন এত দাম এই নোটের
আসলে, ১৯১৮ সালে, লন্ডন থেকে মুম্বই যাওয়ার সময় এসএস শিরালা নামের এই জাহাজটি ডুবে গিয়েছিল। জাহাজটিকে একটি জার্মান ইউ-বোট (সাবমেরিন) টর্পেডো দিয়ে আক্রমণ করেছিল। সেই সময় জাহাজে ছিলেন ২১৩ জন, যার মধ্যে ৮ জন মারা যান। নিহতদের মধ্যে ৭ জনই ছিলেন ভারতীয়। যতদূর সম্ভব তাদেরই ছিল নোটগুলো। সে সময় এই নোটগুলো ছাপত ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড। এই জাহাজে ৫০ হাজার টন পণ্য বোঝাই করা হয়েছিল। এতে ভারতীয় মুদ্রার আসল কাগজপত্রও ছিল।
- জাহাজে ১, ৫ এবং ১০ টাকার নোট ছিল
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর মতে, জাহাজটি ডুবে যাওয়ার পর নোটগুলি ভেসে যায় এবং ব্রিটেনের তীরে পৌঁছে যায়। এর মধ্যে রয়েছে ১, ৫ ও ১০ টাকার নোট। এ সময় সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তারা নোটগুলো নিজেদের দখলে নিয়েছিলেন। নোটগুলি নজরে আসে, যখন কয়েকদিন আগেই ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড একটি পোস্টের মাধ্যমে ১৯১৮ সালের ইউ জাহাজ ডুবির ঘটনাটি শেয়ার করেছিল। তারপর নোটের ক্রমিক নম্বরও এই ব্যাঙ্কের সঙ্গে মিলে গিয়েছে, যা এই পুরো ঘটনার সত্যতার প্রমাণ দিয়েছে।
- এই নিলামে কোন কোন নোট বিক্রি হবে
এছাড়া ব্রিটিশ আমলের ভারতীয় ১০০ টাকার নোটও এই নিলামে বিক্রি হবে। আশা করা হচ্ছে এই নোটটি ৪-৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি হতে পারে। এই নোটটি কলকাতায় স্বাক্ষরিত এবং স্ট্যাম্প করা হয়েছিল। স্ট্যাম্পটি ১৯১৭ থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে ব্যবহৃত হত। এই নোটে হিন্দি ও বাংলায়ও লেখা আছে। নিলামে একটি ৫ টাকার নোটও রয়েছে, যা ১৯৫৭-৬২ সালের। এই নোটে অশোক চক্র খোদাই করা রয়েছে, যার দাম ২ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা থেকে ২ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা পর্যন্তও হতে পারে।
- এসএস শিরালা জাহাজটি কখন এবং কীভাবে ডুবেছিল
জাহাজটি ইংল্যান্ড থেকে ভারতে রুটে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হত। ২৯শে জুন, ১৯১৮ তারিখে, জাহাজটি তার শেষ সমুদ্রযাত্রা করেছিল। ২১৩ জন যাত্রীর সঙ্গে এই জাহাজে ছিল বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র, হাতির দাঁত, ওয়াইন, মার্মালেড, লরির যন্ত্রাংশ, মডেল গাড়ির খুচরো জিনিসপত্র এবং হীরাও। ১৯১৮ সালের ২ জুলাই সন্ধ্যায়, একটি জার্মান ইউ-বোট টর্পেডো এই জাহাজটিকে আক্রমণ করেছিল। টর্পেডোটি জাহাজের বন্দরের পাশে আঘাত করলে সেখানে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটেছিল। এরপর জাহাজের ক্যাপ্টেন ইজি মারে ডিকিনসন সবাইকে জাহাজটি খালি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এর ফলে জাহাজে থাকা ২০০ জন যাত্রীর সবাইই রক্ষা পান। তবে ওই হামলায় নাবিকদের মধ্যে ৮ জন মারা গিয়েছিলেন।