ফেসবুক কর্মী, দিল্লি পুলিশ এবং মুম্বই পুলিশের সম্মিলিত চেষ্টার ফলে রুখে দেওয়া গেল এক যুবকের আত্মহত্যার পরিকল্পনা। লকডাউনে কাজ হারিয়ে তিনি আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
অসাধারণ যোগাযোগ ত্রিভূজের সমন্বয়ে আটকে দেওয়া গেল আত্মহত্যার প্রচেষ্টা। সম্প্রতি আপলোড করা একটি ভিডিয়ো দেখে আত্মহত্যার উদ্যোগ বলে মনে হয়েছিল আয়ার্ল্যান্ডের এক ফেসবুক কর্মীর। গত শনিবার রাত ৮টায় ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে থাকা ফোন নম্বর উদ্ধৃত করে বিষয়টি দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সাইবার) অন্বেষ রায়কে জানিয়ে ই মেল করে জানানো হয়।
ফোন নম্বর ট্র্যাক করে পূর্ব দিল্লির এক ঠিকানায় পৌঁছে পুলিশ জানতে পারে, তা আসলে এক মহিলার। জিজ্ঞাসাবাদের ফলে জানা যায়, ওই ফোন নম্বর আদতে তাঁর স্বামী ব্যবহার করেন। দুই সপ্তাহ আগে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বচসার জেরে ওই ব্যক্তি মুম্বই চলে যান। মুম্বইয়ে তিনি একটি রেস্তোরাঁয় রাঁধিয়ের কাজ করেন। তাণঁর ফোন নম্বর দিলেও ঠিকানা জানাতে ব্যর্থ হন মহিলা।
এর পর মুম্বই পুলিশের সাইবার শাখার ডিসিপি রেশমি করন্ডিকরের সঙ্গে দিল্লি পুলিশের তরফে যোগাযোগ করে সবিস্তারে জানানো হয়। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও ফোন নম্বরে কোনও সাড়া মেলেনি। তত ক্ষণে রাত ১১টা বেজে গিয়েছে এবং ওই ব্যক্তিকে নিয়ে আশঙ্কা ঘনীভূত হতে শুরু করেছে।
এর মধ্যে মুম্বই পুলিশের সাইবার শাখা ফেসবুকে ওই ব্যক্তির আপলোড করা আরও চারটি ভিডিয়ো পোস্ট দেখতে পায়, যা আত্মহত্যার প্রস্তুতিকে নিশ্চিত করে। শেষ চেষ্টা হিসেবে তাঁর মা-কে দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিয়ো কল করানোর চেষ্টা করা হয় পুলিশের তরফে। কিন্তু সেই ফোনও ধরেননি যুবক। তবে খানিক পরেই অন্য নম্বর থেকে তিনি মা-কে পালটা ফোন করেন।
সেই ফোন কলে ঢুকে পড়েন এক পুলিশ আধিকারিক। চেষ্টা চলে কথায় ভুলিয়ে যুবককে ব্যস্ত রাখার। পাশাপাশি, মুম্বই পুলিশের একটি দল ফোন ট্র্যাক করে ঠিকানা তল্লাশিতে বেরিয়ে পড়ে। অবশেষে রাত দেড়টা নাগাদ খুঁজে পাওয়া যায় সেই বাড়ি। যুবককে আত্মঘাতী হওয়া থেকে নিরস্ত করতে সফল হয় পুলিশ।
জানা গিয়েছে, লকডাউনের ফলে রোজগার হারিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই যুবক। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল পারিবারিক অশান্তি। এই কারণে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। তবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ও ভারতের দুই শহরের পুলিশের প্রচেষ্টায় শেষ পর্যন্ত রক্ষা পেয়েছে একটি প্রাণ।