বাডওয়াইজার বিয়ার নিয়ে একটি পোস্ট সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলকালাম শুরু করেছে, যদিও তার দাবির সত্যতা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়ে গিয়েছে।
সম্প্রতি এক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে প্রকাশ হয়েছে বিশ্বখ্যাত বিয়ার ব্র্যান্ড বাডওয়াইজার বিয়ার উৎপাদক সংস্থার এক কর্মীর চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি। তিনি দাবি করেছেন, গত ১২ বছর ধরে হামেশাই না কি তিনি কারখানার বিয়ার ট্যাঙ্কে প্রস্রাব করতেন।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাডওয়াইজার ব্রিউয়ারি এক্সপিরিয়েন্স (ফোর্ট কলিন্স, সি ও) সংস্থার কর্মী ওয়াল্টার পাওয়েল (নাম পরিবর্তিত) জানিয়েছেন, ভাটিখানায় বিয়ারের ট্যাঙ্কে তিনি দিনের পর দিন প্রস্রাব করেছেন। সেই প্রস্রাব মিশ্রিত বিয়ারই পরে বোতল বা ক্যানে ভরে দোকানে ও পানশালায় পরিবেশিত হয়েছে।
স্বীকারোক্তি করতে গিয়ে পাওয়েল জানিয়েছেন, ‘অনেক সময় বন্ধুরা আমার কাছে বিয়ার খেতে চাইলে নিজেরই লজ্জা পেত। ব্যাপরারটা অনেকটা রাশিয়ান রুলেট খেলার মতো, কার ভাগ্যে যে কী আছে কেউ জানে না।’ তবে বিয়ার ছাড়া অন্য কোনও পানীয়ের ট্যাঙ্কে তিনি এই অপকর্ম করেননি বলে জানিয়েছেন পাওয়েল।
বাডওয়াইজার নিয়ে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য নিয়ে গত দিন কয়েক সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় হচ্ছে। অনেকে ভীষণ রেগে গেলেও কেই কেউ এরই মধ্যে হাসির খোরাক খুঁজে পেয়ে মিম বানাচ্ছেন। কিন্তু বিশ্বাস করার আগে বিষয়টি একটু খতিয়ে ভাবা দরকার।
প্রথমত, খবরটি প্রথম প্রকাশিত হয় ‘ফুলিশ হিউমর’ অর্থাৎ বোকা বোকা কৌতুক নামের এক বিদেশি ওয়েবসাইটে। ওই ওয়েবসাইটে সাধারণ ভুয়ো খবর প্রকাশ করে মনোরঞ্জনের চল রয়েছে। খবরের সত্যতা সেখানে যাচাই করা হয় না বলে অনেক সময়ই ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশিত হয়। তা ছাড়া বাডওয়াইজার-এর তরফেও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
১৮৭৬ সালে জন্মসূত্রে জার্মান অ্যাডলফাস বুশ বোহেমিয়া সফরের স্মৃতি হাতড়ে বন্ধু কার্ল কনরাডের সঙ্গে জুটি বেঁধে আমেরিকার মিসৌরি রাজ্যের সেন্ট লুইস শহরের ভাটিখানায় তৈরি করে ফেলেন ‘বোহেমিয়ান স্টাইল’ ল্যাগার বিয়ার। কালে কালে বাডওয়াইজার নামে সেই বিয়ার আমেরিকার অন্যতম সর্বোচ্চ বিক্রীত ল্যাগার ব্র্যান্ড হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বজুড়েও সাংঘাতিক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
এই বিয়ারের মূল উপাদান বার্লি মল্ট, চাল, পানীয় জল, হপস ও খামি। মল্টের সুবাদে বিয়ারের রং এবং বিয়ার গ্যাঁজানোর জন্য প্রয়োজনীয় চিনির জোগান হয়। বিয়ারের লোবনীয় গন্ধের পিছনে রয়েছে খামি বা ইস্ট-এর অবদান। পানীয়ে তিক্ত ভাব, সুগন্ধ ও টানটান স্বাদ জোগায় হপস। আর চাল থেকে আসে চনমনে মেজাজ। পরিশ্রুত জলের সাহায্যে পরিচ্ছন্ন হয় বিয়ারের চেহারা।