দিব্যি চুটিয়ে রোগী দেখতেন তিনি। কিন্তু এক প্রসূতির মৃত্যুর জেরে সবটা সামনে চলে এল এবার। এমনকী তিনি হাসপাতালও চালাতেন বলে অভিযোগ। এদিকে ইতিমধ্যেই সেই হাসপাতালও সিল করা হয়েছে। ওই ব্যক্তিকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। আসলে তিনি চিকিৎসকই নন। তিনি হাতুড়ে। তবে ওই ভুয়ো চিকিৎসকই রীতিমতো চিকিৎসা করতেন হাসপাতালে। উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের ঘটনা। রোগীদের জীবন নিয়ে কার্যত ছিনিমিনি খেলতেন তিনি। এমনটাই অভিযোগ।
ইতিমধ্যেই পুলিশ ওই ভুয়ো চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে। এদিকে ওই মহিলার মৃত্যুর পরে তাঁর স্বামী পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। হাসপাতালের ম্যানেজার রঞ্জিত নিশাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই রঞ্জিত নিশাদই ভুয়ো ডাক্তার বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ৩০ বছর বয়সী ওই গর্ভবতী মহিলা জৈনপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি মঙ্গলবার সত্যম হাসপাতালে মারা গিয়েছেন।
এদিকে একটি দোতলা বিল্ডিংয়ে হাসপাতালটি তৈরি করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে হাসপাতালে ১০টি বেডও রয়েছে। কিন্তু এবার পর্দাফাঁস হয়েছে ভুয়ো ডাক্তারের।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে নিশাদ আসলে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। এদিকে যে চিকিৎসকরা জীবনে কোনওদিন ওই হাসপাতালে আসেননি তাদের নামেই তিনি হাসপাতালের রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেছিলেন।
এসএসপি গৌরব গ্রোভার জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর ধরেই হাসপাতালটি অবৈধভাবে চলছিল। ম্যানেজার নিশাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির কোনও বৈধ মেডিক্যাল ডিগ্রি নেই। কিন্তু তিনি বৈধ ডাক্তারদের প্রেসক্রিপশন ব্যবহার করে ডাক্তারি করতেন। এভাবেই রোগীদের জীবন নিয়ে তিনি ছিনিমিনি খেলতেন। তার অবহেলার কারণেই এক প্রসূতি মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে পুলিশ তদন্তে দেখেছে এর আগে অন্য নামে সে হাসপাতালটি চালাত। পরে সেটি স্বাস্থ্য দফতর বন্ধ করে দিয়েছিল। এরপর সে অন্য ফন্দি আঁটে। রাতারাতি হাসপাতালের নাম বদলে ফেলা হয়। এরপর ফের হাসপাতালটি তিনি খুলে ফেলেন। সেখানে তিনি নিজেই চিকিৎসা করতেন। এমনকী রোগীদের ভর্তি নেওয়ার জন্য বেডও রয়েছে হাসপাতালে।
এদিকে গোটা ঘটনায় সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগের একাধিক কর্মীর ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ এনিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য় জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে গ্যাংস্টার বিরোধী আইন প্রয়োগ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।