গয়না ঘিরে প্রতারণা কাণ্ডে তোলপাড় রাজস্থানের জয়পুর। সেখানে এক দোকান থেকে মার্কিন নাগরিক চেরিশ কিনেছিলেন গয়না। যা পরে আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার পর জানা যায়, যে সেই গয়না জাল। চেরিশ লড়াই ছাড়েননি। সোজা আমেরিকা থেকে চলে আসেন জয়পুরে। সটান চলে যান সেই গয়নার দোকানে। এরপর কী ঘটল? তবে গোটা ঘটনা জানার আগে, এটা জেনে নিন যে, ৩০০ টাকা মূল্যের ওই গয়না জয়পুরের দোকানে চেরিশকে ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে প্রতারণা করা হয়েছিল। অভিযোগ অন্তত এমনই!
জয়পুরের জহুরি বাজার থেকে গয়না কিনেছিলেন চেরিশ। যে এলাকা জয়পুরের মানকচক পুলিশ স্টেশনের আওতায় পড়ে। এপ্রিল মাসে, চেরিশ সদ্য ওই গয়না আমেরিকার এক প্রদর্শনীতে নিয়ে যান। সেখানেই জানা যায় যে, ওই যে গয়না চেরিশ ৬ কোটি টাকা দিয়ে জয়পুর থেকে কিনেছেন বলে দাবি করছেন, তা আসলে ভুয়ো। তার আসল দাম ৩০০ টাকার আশপাশে হতে পারে। এরপর ক্ষোভে ফুঁসে সোজা আমেরিকা থেকে রাজস্থানের জয়পুর আসেন চেরিশ। যে দোকান থেকে কিনেছিলেন সেই গয়না, সেই রাজেন্দ্র সোনি ও তাঁর ছেলে গৌরবের দোকানে তিনি যান। অভিযোগ মানতে চাননি রাজেন্দ্ররা। দুই পক্ষের তুমুল বচসা হয়। এরপর ১৮ মে মানক চক পুলিশ স্টেশনে ওই দোকানদারের নামে অভিযোগ জানান চেরিশ। পাল্টা সেই অভিযোগ খণ্ডন করতে দোকানদার রাজেন্দ্র ও তাঁর ছেলে একটি অভিযোগ আনেন। রিপোর্ট বলছে, রাজেন্দ্ররা বিদেশিনী চেরিশের বিরুদ্ধে ভুয়ো মামলা দায়ের করেন পাল্টা। এরপর চেরিশ সেভাবে আর এই মামলায় কোনও সুরাহা নজরে পাচ্ছিলেন না। শেষমেশ তিনি ভারতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের দ্বারস্থ হন। সেখান থেকে মোড় ঘুরে যায় মামলার।
মার্কিন দূতাবাস চেরিশের মামলায় পদক্ষেপ করতেই রাজস্থান পুলিশ শুরু করে দেয় জোরদার তদন্ত। রাজস্থান পুলিশ জানতে পারে এই ভুয়ো গয়না বিক্রির সম্পর্কে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত দোকানদার রাজেন্দ্র সোনি ও তাঁর ছেলে পলাতক। তবে যে ব্যক্তি ওই গয়নার জাল সার্টিফিকেট বের করেছিলেন, তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়েছে পুলিশ। পুলিশের তরফে বজরং সিং শেখাওয়াত বলছেন, ‘তদন্তে দেখা গিয়েছে, রুপোর গয়না সোনার জল করে বিক্রি করা হচ্ছিল, আর যে গয়নার দাম ৩০০ টাকা, তা ৬০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছিল।’ পুলিশ জানিয়েছে বিদেশিনীকে জাল সার্টিফিকেটও দেওয়া হয়। জাল সার্টিফিকেট কাণ্ডে ধরা পড়েছেন নন্দ কিশোর নামের এক ব্যক্তি।