প্রয়াগরাজে চলছে মহাকুম্ভ মেলা। এই মেলায় পবিত্র স্নান করতে অংশগ্রহণ করেছেন লক্ষ-লক্ষ পুণ্যার্থী। এবার যা ঘটল, তা কোনও অংশে অলৌকিক ঘটনার চেয়ে কম নয়। ১৫ বছর আগে স্মৃতি হারিয়ে যাওয়ায় নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। কিন্তু, মহাকুম্ভ শব্দ শুনেই আচমকা স্মৃতি ফিরে পেলেন কলকাতা পুরসভার এক কর্মী। আর তারপরে তাঁকে খুঁজে পেল তাঁর পরিবার। এমনই ঘটনা ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের কোডারমায়।
আরও পড়ুন: বাংলায় ‘কুম্ভ উৎসব,’ বলেছিলেন মোদী, কবে হবে এবার? HT Bangla-কে জানালেন আয়োজকরা
জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ মাহাতো। তিনি মারকাচো থানা এলাকার কাদোদিহের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে খুঁজে না পাওয়ায় শেষপর্যন্ত সরকারের কাছে তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করেছিল পরিবার। ঠিক সেই সময় প্রকাশকে খুঁজে পেয়েছেন আত্মীয়রা। জানা গিয়েছে, প্রকাশ মাহাতো আগে কলকাতা পুরসভায় কর্মরত ছিলেন। ২০১০ সালের ৯ মে কাজের জন্য কলকাতায় যাওয়ার সময় তিনি রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন। তাঁর পরিবার ঘটনায় মারকাচো থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে। কিন্তু, তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি, মারকাচো পুলিশ বাংলার রানিগঞ্জের হোটেল অপারেটর সুমিত সাও নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ফোন পায়। তিনি পুলিশকে প্রকাশের কথা জানান। তখন পুলিশ প্রকাশের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারা পরিচয় নিশ্চিত করতে রানিগঞ্জে ছুটে যান। অবশেষে গত ৭ জানুয়ারি তাদের পুনর্মিলন হয়। দীর্ঘদিন পর আপনজনকে খুঁজে পেয়ে আনন্দের শেষ ছিল না পরিবারের সদস্যের।
সুমিত সাও জানান, ১৫ বছর আগে প্রকাশকে হোটেলে চাকরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি জানান, হোটেলে কুস্তিগির নামে পরিচিত প্রকাশ। তখন থেকেই তিনি সেখানে থাকছিলেন এবং কাজ করছিলেন। সুমিত জানান, তাঁর বাবা প্রকাশকে আশ্রয় এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি তাদের পরিবারের সদস্য হয়ে উঠেছিলেন।
সুমিত আরও জানান যে, যখন তাঁর পরিবার মহাকুম্ভের তীর্থযাত্রা নিয়ে আলোচনা করছিল, তখন তাঁর স্মৃতি ফিরে আসে। প্রকাশ জানান, যে তাঁকে অবশ্যই কুম্ভমেলায় যেতে হবে। কারণ তাঁর বাড়ির রাস্তার মধ্যে পড়ে। এরপর সুমিত তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকাশের তাঁর পরিবারের কথা মনে পড়ে যায়। তখন সুমিত বিষয়টি স্থানীয় পুলিশকে জানান। পরে পুলিশের তরফে মারকাচো থানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
শুক্রবার মারকাচো থানার ওসি আনুষ্ঠানিকভাবে ৫২ বছর বয়সি প্রকাশ মাহাতোকে তাঁর স্ত্রী গীতা দেবী এবং তাঁদের সন্তান সুজল (১৮) এবং রানির (১৬) পুনরায় মিলিয়ে দেন। জানা যায়, স্বামী নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর গীতা শ্রমিকের কাজ করে একা সন্তানদের বড় করেছিলেন। তিনি স্বামীকে পেয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। এদিকে, প্রকাশ পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার ১০ দিন আগে কলকাতা পুরসভা তাঁর অনুপস্থিতিতে বকেয়া অর্থ প্রদানের বিষয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছিল।