শর্তসাপেক্ষে আলোচনা বসার প্রস্তাব দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। প্রথম থেকে তাতে অসন্তুষ্ট ছিলেন বিক্ষোভরা কৃষকরা। রবিবার সরকারিভাবে সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিল ৩০ টি কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ।
কেন্দ্রের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে রবিবার সকালে হরিয়ানা-দিল্লির সিংঘু সীমান্তে বৈঠকে বসে কৃষক সংগঠনগুলি। ‘দিল্লি চল’ বিক্ষোভের জন্য আপাতত পঞ্জাব, হরিয়ানা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের চাষিরা সেখানেই জমায়েত করেছেন। সেই বৈঠকের পর ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের (সিংঘুপুর) সভাপতি জগজিৎ সিং ডালেওয়াল জানান, যন্তর মন্তরের পরিবর্তে নয়াদিল্লি বুরারির মাঠে বিক্ষোভ প্রদর্শনের শর্তে কেন্দ্র যে বৈঠকে বসার প্রস্তাব দিয়েছে, তা সর্বসম্মতভাবে খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।
যৌথ মঞ্চের নেতা বলেন, ‘বিক্ষোভের জায়গা নিয়ে আমাদের কোনও দাবি নেই। দিল্লিমুখী বিভিন্ন রাস্তায় আছেন আমাদের সমর্থকরা এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য ধরনা শুরু হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে যে কোনওরকম শর্ত ছাড়া কেন্দ্র যদি আমন্ত্রণ জানায়, তবেই আলোচনা সম্ভব। শর্তসাপেক্ষে প্রস্তাব খারিজের বিস্তারিত কারণ ব্যাখ্যা করে আমরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে (অজয় ভাল্লা) লিখিত উত্তর দেব।’
কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে সুর কিছুটা নরম করে শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, কৃষকরা যাতে গণতান্ত্রিক এবং শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভে সামিল হতে পারেন এবং তাঁদের সমস্যার মধ্যে পড়তে না হয়, সেজন্য উত্তর দিল্লির মাঠে জল, শৌচাগার এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে সরে গেলেই চাষিদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি নরেন্দ্র মোদী সরকার।
শাহ বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে পঞ্জাব, হরিয়ানা এবং দেশের কয়েকটি অংশের কৃষকরা দিল্লির সীমান্তে এসেছেন। গতকাল (শুক্রবার) থেকে চাষিরা পঞ্জাবের দুটি গুরুত্বপূর্ণ হাইওয়ের কাছে জমায়েত করে আছেন। প্রবল ঠান্ডার কারণে কৃষকরা অনেক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। অন্যান্য মানুষরাও সমস্যার মুখে পড়ছেন।’ তবে আগামী সোমবার (১ ডিসেম্বর) বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি।
গতরাতে দিল্লি ও আশপাশের এলাকায় জমায়েত হওয়া ৩২ টি কৃষক সংগঠনকে ভাল্লা জানিয়েছিলেন, কৃষকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় তৈরি আছে উচ্চপর্যায়ের একটি মন্ত্রিগোষ্ঠী। একইসঙ্গে বুরারির মাঠে সরে যাওয়ার শর্তে আগেই আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
তবে ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের (উঘরাহন) তরফে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। পঞ্জাবে অন্যতম সক্রিয় সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে, ‘কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের সংগঠনের নেতারা যৌথ মঞ্চের সঙ্গে কথা বলবে।’