গত কয়েক দিনের চাপান-উতোর ও উত্তেজনার পরে অবশেষে দিল্লিতে প্রবেশাধিকার পেল বিক্ষুব্ধ কৃষকদের মিছিল। শুক্রবার দুপুরে টিকরি সীমান্ত দিয়ে রাজধানীতে প্রবেশ করেন হাজার হাজার প্রতিবাদী কৃষক।
দিল্লি পুলিশের তরফে জনসংযোগ আধিকারিক ঈশ সংঘল কৃষকদের উদ্দেশে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। রাজধানীতে বুরারির নিরংকারী সমাগম মাঠে তাঁদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ অবস্থানের অনুমোদন দিয়েছে পুলিশ।
দিল্লিতে কৃষকদের প্রবেশাধিকার দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে স্বাগত জানিয়েছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। টুইটারে তিনি মন্তব্য করেছেন, ‘প্রতিবাদ করার গণতান্ত্রিক অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে কৃষকদের দিল্লিতে প্রবেশাধিকার দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে স্বাগত। এবার কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে অবিলম্বে পদক্ষেপ করুক প্রশাসন।’
শুক্রবার সকালে দিল্লি-হরিয়ানা সিংঘু সীমান্তে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ বাধে। রাস্তায় পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এবং পুলিশকর্মীদের নিশানা করে পাথর ছুড়তে দেখা যায় বেশ কয়েকজন প্রতিবাদীকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশও।
কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী থাকা সত্ত্বেও এ দিন সকালে দিল্লি সীমান্তে পৌঁছে যান পঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে আসা প্রতিবাদী কৃষকরা। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে ব্যারিকেড ভেঙে রাজধানীতে প্রবেশের চেষ্টা করলে বিশাল নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে একাধিক জায়গায় তাঁদের সংঘর্ষ বাধে। কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায় ঢাকা পড়ে গোটা এলাকা, আকাশে চক্কর কাটতে দেখা যায় নজরদারি ড্রোনকে।
সীমান্ত পেরিয়ে সংঘর্ষের আঁচ এসে পৌঁছায় জাতীয় সড়কেও, যার উপরে বসে পড়েন অসংখ্য কৃষক। অনেককে আবার দিল্লিতে প্রবেশের উদ্দেশে যানজটে ফেঁসেযাওয়া ট্রাক ও ট্যাক্টরের উপরে দাঁড়িয়ে অধৈর্য হতেও দেখা যায়।
বিক্ষোভকারীদের রুখতে সিংঘু সীমান্তে বালির বস্তা, জল কামান, কাঁটা তারের ব্যারিকেড ও কাঁদানে গ্যাসের যথেচ্ছ ব্যবহার করেও ব্যর্থ হয় পুলিশ। ফরিদাবাদ ও গুরগাঁও সীমান্তেও একই দৃশ্য নজরে পড়ে। আবার তিগ্রি সীমান্তেও জল কামান নিয়ে প্রতিবাদী মিছিল রোখার চেষ্টা করে নিরাপত্তা বাহিনী। সেখানে রাস্তার উপরে দাঁড় করানো একটি ট্রাক সরাতে ট্র্যাক্টরে শিকল বেঁধে টানতে দেখা যায় বিক্ষুব্ধ কৃষকদের।
পরিস্থিতির ক্রমাবনতিতে শেষ পর্যন্ত টনক নড়ে কেন্দ্রীয় প্রশাসনের। কৃষক নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনার পরে বিক্ষোভ মিছিল দিল্লিতে ঢোকার অনুমতি দেয় দিল্লি পুলিশ। তবেল তাঁদের উত্তর শহরতলির বুরারিতে নিরংকারী সমাবেশ মাঠে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ প্রদর্শনের অনুমোদন দেওয়া হয়।
কৃষক নেতা জগমোহন সিং এই তথ্য স্বীকার করে বলেন, কমপক্ষে ৩০টি কৃষক সংগঠন মিছিলে শামিল হয়েছে।