দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর কেন্দ্রের সঙ্গে কৃষক সংগঠনের বৈঠক ফলপ্রসূ হল না। বরং বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য কেন্দ্র যে ছোটো একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল, তা খারিজ করে দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি। তাদের তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, সকলের সঙ্গে কেন্দ্রকে আলোচনায় বসতে হবে।
মঙ্গলবার দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে তিন ঘণ্টার বৈঠকে ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর, কেন্দ্রীয় বাণিজ্য এবং রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী সোমপ্রকাশ। যিনি পঞ্জাবের সাংসদ। সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রের খবর, বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে নয়া তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের সওয়াল করেছেন কৃষকদের প্রতিনিধিরা। তিনটি আইনের ফলে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বিপন্ন হবে এবং তাঁদের বড় বড় বাণিজ্যিক সংস্থার উপর নির্ভরশীল থাকতে হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। যদিও নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে কেন্দ্র দাবি করেছে, আইনগুলির ফলে কৃষকরা নয়া সুযোগ-সুবিধা পাবেন এবং কৃষিক্ষেত্রে নয়া প্রযুক্তির সুবিধা নিতে পারবেন চাষিরা।
কেন্দ্রের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আলোচনা এখনও চলবে। বৈঠকের পর ভারত কিষান ইউনিয়নের (একতা উগরাহন) সভাপতি যোগিন্দর সিং উগরাহন জানান, বৈঠকে কোনও সমাধানসূত্র বের হয়নি। আগামী বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) আরও একদফার বৈঠকের জন্য কেন্দ্র ডেকেছে। সংগঠনের এক সদস্য জানিয়েছেন, নয়া কৃষি আইনের বিষয়টির জন্য পাঁচ-সদস্যের একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রের প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়া হলেও খুব একটা আশাহত নন কৃষিমন্ত্রী। বরং তিনি বলেন, 'বৈঠক ভালো হয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আগামী ৩ ডিসেম্বর বৈঠক হবে। আমরা একটি ছোটো গোষ্ঠী তৈরি করতে চাইছিলাম। যদিও কৃষকরা জানিয়েছেন যে তাঁরা সকলের সঙ্গে কথা চান। তাতে আমাদের কোনও সমস্যা নেই।' একইসঙ্গে চাষিদের বিক্ষোভ থেকে সরে যাওয়ার আর্জিও জানানো হয়েছে বলে দাবি করেন তোমর। তিনি বলেন, 'আমরা কৃষকদের বিক্ষোভ স্থগিত রেখে আলোচনার আসার আর্জি জানিয়েছেন। তবে সেই সিদ্ধান্ত কৃষক সংগঠন এবং কৃষকদের উপর নির্ভর করবে।'
এদিকে, মঙ্গলবার কৃষকদের বিক্ষোভে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি শাহিনবাগের ‘দাদি’ বিলকিসকে (৮২)। যিনি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে বিক্ষোভের অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছিলেন। এক উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসারকে উদ্ধৃত করে পিটিআই বলেছেন, ‘তাঁকে সিংঘু সীমান্তে আটকানো হয়েছিল। পুলিশি নিরাপত্তায় তাঁকে দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির বাড়িতে দিয়ে আসা হয়েছে।’ বিক্ষোভে যোগ দিতে আসার আগে শাহিনবাগের ‘দাদি’ বলেছিলেন, ‘আমরা কৃষকদের মেয়ে। আমরা আজ চাষিদের সমর্থন করতে যাব। আমাদের আওয়াজ তুলব। সরকারকে আমাদের আওয়াজ শুনতে হবে।’