তান্ত্রিকের নিদান মেনে আচার অনুষ্ঠান পালন করতে গিয়ে মৃত্যু হল একই পরিবারের দুই সদস্যের। এছাড়াও চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তিশগড়ের শক্তি জেলায়। জানা গিয়েছে, এক সপ্তাহ ধরে ঘরের ভিতরে বিভিন্ন মন্ত্র পাঠ ও জপ করছিলেন। তবে ক্রমেই মন্ত্রপাঠের আওয়াজ কমে যাওয়ায় পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রাই। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে দুজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: আত্মহত্যা নয়, একই পরিবারের ৯জনকে বিষ খাইয়ে খুন! তদন্তে নয়া তথ্য,পেছনে তান্ত্রিক!
প্রতিবেশীরা জানান, গত একসপ্তাহ ধরে অবিরামভাবে পরিবারের সদস্যরা মন্ত্র পাঠ করছিলেন। তবে তাদের মন্ত্রপাঠের আওয়াজ ক্ষীণ হয়ে আসায় স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। তখন তারা ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন দুই ভাই মেঝেতে এবং অন্যরা বিভিন্ন জায়গায় অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। সবমিলিয়ে ৬ জন ছিল ওই বাড়িতে। পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে ৬ জনকেই হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে দুই ভাই বিক্রম (২১) এবং ভিকি (১৯)-কে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তাদের মা পিরিত বাই, বোন চন্দ্রিকা এবং আম্রিকা ও এবং ভাই বিশা গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে রয়েছেন। তাদের কারোরই জ্ঞান ফেরেনি।
দুই বোন কয়েক সেকেন্ডের জন্য বিড়বিড় করে বলে ওঠেন যে ‘খারাপ শক্তি আমাদের ঘরে এবং শরীরে প্রবেশ করেছে। আমাদের ওপর দখল করেছে।’ তবে শক্তির এসপি অঙ্কিতা শর্মা জানান, এখন রোগীরা যা বলছেন তার উপর নির্ভর করা যেতে পারে না কারণ তারা সম্পূর্ণ সচেতন নন।
এদিকে, দুই ভাইয়ের দেহের ময়নাতদন্ত ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। তাদের শরীরে বিষের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। তাই পুলিশ একে হত্যা বলেই ধরে নিচ্ছে। তবে তারা নিজেরাই বিষ খেয়েছেন নাকি জোর করে খাওয়ানো হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। এসপি শর্মা জানান, যে পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে উপবাসে ছিল এবং সেই অবস্থাতেই বাড়ির ভিতরে একটি অনুষ্ঠান করছিল। পুলিশ জানতে পেরেছে যে পরিবারটি সাত দিন ধরে উপবাস করছিল এবং তাদের কেউ বাড়ি থেকে বের হয়নি। প্রতিবেশীরা মাঝে মাঝে তাদের চিৎকার শুনতে পেয়েছিলেন।
শুক্রবার, প্রতিবেশীরা বুঝতে পারে যে বাড়ি থেকে মন্ত্রগুলি খুব আস্তে শোনাচ্ছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ উঁকি মেরে দেখেন যে পরিবারের চারজন সদস্য দুটি মৃতদেহের পাশে বসে একজন দেবতার ছবির পুজো করছে। প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ সুপার জানান, যে তান্ত্রিকের কথা শুনে তারা এই কাজ করেছেন তিনি মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনের বাসিন্দা।