নির্মম, নৃশংস, ভয়াবহ! কেবলমাত্র স্কুলের ফিজ চাওয়ার 'অপরাধে' ৭ বছরের ছেলের মাথা কেটে ধর থেকে আলাদা করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তারই বাবার বিরুদ্ধে! অভিযোগ, ওই ব্যক্তি ছেলেকে খুন করার আগে তাকে বেতও মারেন! পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার এই নারকীয় ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের গোপালগঞ্জ জেলার একটি গ্রামে।
এই ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত একটি হিন্দুস্তান টাইমসের হাতে এসে পৌঁছেছে। সেই সূত্র অনুসারে, যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে এহেন পৈশাচিক ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে, তাঁর নাম অরবিন্দ সিং।
৪৫ বছরের অরবিন্দ গোপালগঞ্জের ভোরে থানা এলাকার কল্য়াণপুর টোলি চৌতারওয়া গ্রামের বাসিন্দা। নিজের বাড়িতেই এই ভয়াবহ কাণ্ড ঘটিয়েছেন তিনি। যদিও এত কিছুর পরও তাঁর মধ্যে কোনও অপরাধবোধ দেখা যায়নি!
তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'আসলে ধরেই নেওয়া হয়েছিল যে আমি টাকা দেব। কারণ, আমার বাবা-মা মনে করেন, আমার কাছে অনেক টাকা আছে। যেহেতু আমি কিছুদিন বিদেশে চাকরি করেছিলাম, তাই তাঁরা এমনটা ভাবেন।...'
'তবে এখন আমার বেশ হালকা লাগছে। আমাকে আর ওর জন্য বাড়ি তৈরি করতে হবে না। এবং ওর জন্য কোনও সম্পত্তিও কিনতে হবে না!'
অরবিন্দ সিংয়ের তিন সন্তান। তার মধ্যে প্রথম দু'টি কন্য়া সন্তান। তাদের বয়স যথাক্রমে - ১২ বছর এবং ৯ বছর। যাকে তিনি খুন করেছেন বলে অভিযোগ, সেই একমাত্র ছেলেটি ছিল অরবিন্দর সবথেকে ছোট সন্তান - যার বয়স ছিল মাত্র ৭ বছর।
ছেলেকে খুন করার পরও নিরুত্তাপ থেকেছেন ওই ব্যক্তি। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'আমি জানি, এরপর আমাকে কিছু দিন জেলে থাকতে হবে!' অর্থাৎ, নিজের কৃতকর্ম সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হওয়া সত্ত্বেও কোনও আফশোস দেখা যায়নি তাঁর মধ্য়ে!
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ভূমধ্য সাগরীয় এলাকায় মেকানিক হিসাবে কাজ করেছেন অরবিন্দ। বছর খানেক আগে সেখান থেকে দেশে ফেরেন তিনি। অরবিন্দ জানিয়েছেন, 'আমি যখন এই খুনটা করি, সেই সময় বাড়িতে আর কেউ ছিল না।'
ঘটনা প্রসঙ্গে অভিযোগ হল, এদিন সকাল থেকেই ছেলের উপর রেগে ছিলেন অরবিন্দ। ৭ বছরের বালকটি ক্লাস ওয়ানে পড়ত। এদিন সকাল থেকেই বাবার কাছে টাকা চাইছিল সে, স্কুলের ফিজ দিতে হবে বলে। এদিকে, অরবিন্দর স্ত্রীও বাড়িতে ছিলেন না। তিনি গিয়েছিলেন গোরক্ষপুরে চিকিৎসা করাতে।
ফাঁকা বাড়িতে ৭ বছরের বালক যখন দুপুরে স্কুল থেকে ফিরে আসে, অভিযোগ - সেই সময়েই তার বাবা প্রথমে তাকে বেত মারেন। তারপর ধারাল ছুরির কোপ মেরে ধর থেকে তার মাথা আলাদা করে দেন!
এরপর ছেলের কাটা মুণ্ড হাতে নিয়েই ছিলেন অরবিন্দ! তাঁর দুই মেয়ে কাছেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিল। তারা যখন তাদের বাবার হাতে ভাইয়ের কাটা মুণ্ড দেখে, ঘটনা জানাজানি হয়।
পরে এলাকাবাসী ও আত্মীয়রা দেখেন, অরবিন্দর ছেলের মুণ্ডহীন ধর মাটিতে পড়ে রয়েছে। পাশেই পড়ে রয়েছে একটি রক্তমাখা ছুরি! খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তারা।