আচমকাই বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন বাবা। বহু খোঁজ করেও বাবার হদিশ পাননি ছেলে। কিন্তু বছর দুয়েক পর যখন তাঁকে খুঁজে পেলেন, চক্ষু চড়কগাছ ছেলের। জানতে পারলেন, প্রাক্তন বউমার সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন শ্বশুর! অর্থাৎ প্রাক্তন স্ত্রীকে তাঁর বাবা বিয়ে করায় এখন তিনি যুবকের সৎ মা! শুধু যুবকের ফুটফুটে ‘ভাই’-ও আছে।
বাবাকে খুঁজতে গিয়ে যে, এমন চরম অস্বস্তির মুখে পড়তে হবে উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁর ওই যুবককে, তা তিনি স্বপ্নেও কল্পনাও করতে পারেননি। এই সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই যুবক। আগের বিয়ের কোনও উপযুক্ত প্রমাণ না থাকায় দু’পক্ষকে বসে আলোচনা করতে নোটিস পাঠিয়েছে পুলিশ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁর বাসিন্দা বছর ৪৮’র ওই ব্যক্তি পেশায় সাফাইকর্মী। বছর দুয়েক আগে আচমকা ওই ব্যক্তি ভরা সংসার ফেলে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যান। আর ফিরে আসেননি। থাকতে শুরু করেন সম্বলে। এমনকী, এক সময় বাড়িতেও টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেন ওই সাফাইকর্মী। শুধু তাই নয়, তারপর থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও ছিন্ন করে দেন তিনি। কোনও হদিশ না পেয়ে বাবাকে খুঁজতে কোমর বেঁধে নামে তাঁর ছেলে।
বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েই চোখ কপালে ওঠে তাঁর। তিনি ওই বাড়িতে পৌঁছে দেখেন, তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী বাবার সঙ্গে দিব্যি সংসার পেতেছেন। তাঁদের দু’বছরের সন্তানও রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন ওই সাফাইকর্মী যেই মেয়েকে বিয়ে করেছেন, তাঁর সঙ্গে ২০১৬ সালে বিয়ে হয় তাঁর ছেলের। অবশ্যে সেই সময় স্বামী স্ত্রী দু’জনেই অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন।
বিযের ৬ মাসের মধ্যেই সংসার ভেঙে যায় তাঁদের। নাবালিকা স্ত্রীর অভিযোগ ছিল, তাঁর স্বামী মদ্যপ। এর পরেই ওই যুবকের সঙ্গে সংসার করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তারপর শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে যান ওই কিশোরী বধূ। তার পর থেকে আর সেই সংসার জোড়া লাগেনি। এতকিছু ঘটে যাওয়ার পর বাবার সঙ্গে প্রাক্তন স্ত্রীর বিয়ে মেনে নিতে পারেননি ওই যুবক।
বিসৌলি থানায় গিয়ে দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তবে অভিযোগ দায়ের না করে পুলিশ ওই দম্পতিকে থানায় ডেকে পাঠায়। সেখানে ওই যুবক যে তাঁর প্রাক্তন স্বামী, তা অবশ্য স্বীকার করে নেন তাঁর সৎ মা। তবে এও স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, তিনি আর প্রাক্তন স্বামীর সংসারে ফিরবেন না। কারণ, তিনি তাঁর বাবার সঙ্গে সুখেই সংসার করছেন। বিসৌলি থানার আধিকারিকদের দাবি, যুবকের সঙ্গে ওই মহিলার আইনি মতে নিয়ম মেনে বিয়ে হয়নি। প্রমাণ না থাকার কারণে ওই দম্পতির বিরুদ্ধে কোনও মামলা রুজু করা সম্ভব নয়। তবে আলোচনায় বসে যাতে এই সমস্যা মেটে, সেজন্য দু’পক্ষকে নোটিস দেওয়া হয়েছে।