কল্যাণ দাস
৯ সেপ্টেম্বর, বুধবার দেরাদুনে খুন হন কলকাতার আদি বাসিন্দা ৬৭ বছরের এক অধ্যাপিকা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই ঘটনার কিনারা করল পুলিশ। শুক্রবার ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে দেরাদুন পুলিশ। পুলিশের দাবি, ওই ব্যক্তি খুনের কথা স্বীকার করেছেন এবং পাশাপাশি তাঁর কাছ থেকে এক চাঞ্চল্যকর তথ্যও পাওয়া গিয়েছে। ধৃতের দাবি, ওই বৃদ্ধার বিকৃত যৌন চাহিদার জেরে তিনি অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন। অতিরিক্ত চাপের মধ্যে পড়েই তাঁকে খুন করতে বাধ্য হন ওই ব্যক্তি।
পুলিশ জানিয়েছে, দেরাদুনের দইওয়ালা এলাকায় অধ্যাপিকা পুতুল ঘোষকে খুনের অভিযোগে ধৃত ব্যক্তির নাম তনুজ আজওয়াল। বাড়িতে একাই থাকতেন অবিবাহিত ওই অধ্যাপিকা। জুতোর দোকানি তনুজ থাকেন মা–বাবার সঙ্গে। দেরাদুনে। তিনিও অবিবাহিত। ছেলের এই সম্পর্কের ব্যাপারে তনুজের বাড়ির লোকজন জানতেন না।
দইওয়ালা থানার পুলিশ আধিকারিক মহাবীর সিং রাওয়াত জানিয়েছেন, এক সূত্রে মারফত খবর পেয়ে আজওয়ালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তে জানা যায়, ওই বাড়ি ছাড়াও একাধিক জায়গায় পুতুলদেবী এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতেন। সেই সূত্র ধরেই শুক্রবার আজওয়ালকে ধরা হয়। জেরার মুখে তিনি অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন।
ওই পুলিশ আধিকারিক আরও জানান, জেরায় আজওয়াল পুলিশকে জানিয়েছেন, গত বছর ডিসেম্বর মাসে পুতুলদেবীর মামার সৎকারের সময় তাঁদের দু’জনের আলাপ হয়। দেরাদুনে মৃত ওই মামার বাড়িতেই থাকতেন পুতুলদেবী। তার পর থেকেই তাঁদের দেখাসাক্ষাৎ শুরু হয়। ওই বাড়িতে আসতে শুরু করেন আজওয়াল। আর তার পর থেকেই নানারকম বিকৃত যৌন চাহিদা মেটাতে আজওয়ালকে চাপ দিতে শুরু করেন পুতুলদেবী। এমনকী যৌনক্ষমতা বাড়াতে সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার কথাও বলেন। এমনই দাবি অভিযুক্ত আজওয়ালের।
আজওয়াল আরও জানিয়েছেন, পুতুলদেবীর এমন কার্যকলাপ এবং প্রতিনিয়ত যৌন চাহিদা মেটানোর চাপে পড়ে বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। ওই সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার পর থেকে অ্যালার্জির বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন। এই মানসিক অত্যাচার বন্ধ করতেই পুতুলদেবীকে খুন করেন আজওয়াল। তিনি জানিয়েছেন, ৯ সেপ্টেম্বর রাতে পিছনের জানালা দিয়ে বাড়িতে ঢুকে ওই কাণ্ড ঘটিয়েছেন তিনি।
তদন্ত চলাকালীন আজওয়ালের কাছ থেকে প্রায় ১২০ গ্রামের সোনার জুয়েলারি, তিনটি সোনার কাফলিঙ্কস, একটি বিদেশি ব্র্যান্ডের হাতঘড়ি উদ্ধার করেছে পুলিশ। বর্তমান বাজারে এ সবের দাম ৮ লাখ টাকার কাছাকাছি। আজওয়াল পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁর কাছ থেকে যৌন চাহিদা মিটিয়ে নেওয়ার বিনিময়ে এগুলি দিয়ে তাঁকে লোভ দেখান পুতুলদেবী। এদিন আজওয়ালকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠিয়েছেন।