স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফেরানোর অভিযোগ উঠল দক্ষিণ কলকাতার দুই নামকরা হাসপাতালের বিরুদ্ধে। আর এর জেরেই এবার সরকারের কোপের মুখে পড়ল এই দুই হাসপাতাল। জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকায় রোগীকে ফিরিয়ে দিয়েছিল বাঘাজতিনে অবস্থিত আইরিস হাসপাতাল এবং ফর্টিস হাসপাতাল। আর এর জেরে দুই হাসপাতালকেই ভরতে হবে জরিমানা। ফর্টিস হাসপাতালকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিল রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। আইরিস হাসপাতালকে ৫০,০০০ টাকা জরিমানা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ফর্টিস হাসপাতালের বিরুদ্ধে বাড়তি বিল জুড়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। যার জেরে তাদেরকে অতিরিক্ত ৯০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য কমিশন। উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড রয়েছে এমন কোনও রোগীকে হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না। একথা আগেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরেও অভিযোগ উঠছিল, স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন হাসপাতাল চিকিৎসা পরিষেবা না দিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছে রোগীদের।
নির্বাচনের কয়েকমাস আগেই রাজ্যের সব বাসিন্দাদের জন্য স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পরিষেবার কথা ঘওষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। এরপর দীর্ঘ লাইন দিয়ে সেই কার্ড করান রাজ্যের কয়েক লক্ষ মানুষ। তবে কার্ড হাতে মিললেও স্বস্তি পাননি অনেকেই। কারণ এই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিতে অস্বীকাক করছিল বহু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মমতার স্বপ্নের প্রকল্প হয়রানির কারণ হয়ে দাঁড়ায় বহু রাজ্যবাসীর কাছেই। তবে পরিস্থিতি বদলাতে মরিয়া ছিল সরকারও। মানুষের কাছে সঠিক পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য বদ্ধপরিকর সরকার কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে তারপরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠতেই থাকে। হাসপাতালগুলির অভিযোগ, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বেঁধে দেওয়া টাকায় চিকিৎসা করিয়ে লোকসানের লোকসানের মুখোমুখি হচ্ছে তারা। আবার বহু ক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতালগুলি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতাভুক্ত নয়, এমন দাবিও করছে।
এই আবহে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছিল, স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড রয়েছে এমন কোনও রোগীকে চিকিৎসা পরিষেবা না দিলে বাতিল হতে পারে ওই নির্দিষ্ট হাসপাতালে লাইসেন্স। বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, ১০টি বেড রয়েছে এমন ছোটো মাপের কোনও নার্সিংহোম থেকে শুরু করে বড় মাপের কর্পোরেট কোনও হাসপাতাল, স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড রয়েছে এমন কোনও রোগীকে চিকিৎসা পরিষেবা না দিয়ে ফিরিয়ে দিলে, সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোম বা হাসপাতালের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ক্লিনিক্য়াল এসট্যাবলিশমেন্ট আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারের সাফ কথা, স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় মানুষকে পরিষেবা দিতে হবে হাসপাতালগুলিকে। কিন্তু তারপরও ঘটছে একের পর এক রোগী ফেরানোর ঘটনা।