এবার সরাসরি রাহুল গান্ধীর নামে এফআইআর করা হল অসমে। সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নির্দেশেই সেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এক সোশ্যাল মিডিয়া বার্তায় হিমন্ত নিজে সেই কথা জানিয়েছেন। অবশ্য শুধু রাহুল গান্ধী নন, এফআইআর হয়েছে সিপিআই থেকে কংগ্রেসে আসা কানহাইয়া কুমার এবং কংগ্রেসের সাংসগঠনিক সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপালের নামেও। হিমন্ত জানিয়েছেন, হিংসা, উসকানি, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট এবং পুলিশকর্মীর ওপর হামলার অভিযোগে এই এফআইআর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল দুপুর নাগাদ গুয়াহাটির উপকণ্ঠে 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা' ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাঁধে। শহরে ঢুকতে যাওয়ার সময় কংগ্রেস কর্মীরা বাধা দেয় পুলিশ। সেই বাধার মুখে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছিল গুয়াহাটির উপকণ্ঠে। উল্লেখ্য, গুয়াহাটি দিয়ে পদযত্রার অনুমতি চাওয়া হলেও তা কংগ্রেসকে দেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। এই আবহে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছিলেন, গুয়াহাটিতে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল আছে। শহরে মিছিল করলে সাধারণ মানুষের সমস্যা হবে। তাই শহরের পাশ কাটিয়ে যেকোনও রুট দিয়ে যেতে চাইছে মিছিলকে অনুমতি দেওয়া হবে। তবে শহরে যাত্রাকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। সেই মতো মঙ্গলবার গুয়াহাটি ঢোকার পথে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন রাহুল গান্ধীরা।
এর আগে অসমের বাতদ্রব থান নামক একটি মন্দিরে যেতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছিলেন রাহুল গান্ধী। পুলিশ তাকে মন্দিরে ঢুকতে বারণ করলে সেখনেই কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ধরনায় বসেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ। এদিকে রাহুল গান্ধীর 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা'র বিরুদ্ধে আগেই এফআইআর দায়ের হয়েছিল অসমে। সেই এফআইআর-এ পদযাত্রার আয়োজক হিসেবে কেবি বাইজুর নামও আছে। অভিযোগ, অসমের জোরহাট থেকে নির্দিষ্ট রুটে না গিয়ে পথ পরিবর্তন করেছিল 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা'। এই কারণেই এফআইআর রুজু হয়েছে রাহুলের পদযাত্রার বিরুদ্ধে। রিপোর্ট অনুযায়ী, নিয়ম বহির্ভূত ভাবে শহরের মধ্যে নির্দিষ্ট পথ বদল করা হয় যাত্রাকালে। এর জেরে গোটা এলাকায় অরাজকতার সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এই আবহে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রাহুলের যাত্রার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। তবে এবার সরাসরি রাহুলের নামেই এফআইআর হল। এর আগে হিমন্ত মন্তব্য করেছিলেন, 'লোকসভা ভোটের ৩-৪ মাস পর রাহুল গান্ধীদের গ্রেফতার করা হবে।'
এদিকে গতকালকের ঘটনার পর গুয়াহাটি থেকে প্রায় ৩০ কিমি দূরে হাজোতে একটি সাংবাদিক বৈঠক কেন রাহুল গান্ধী। সেখানে তিনি দাবি করেন, কংগ্রেস কর্মীরা এই বাধাতে ভীত নন। আগের সূচি মেনেই যাত্রা এগিয়ে যাবে। রাহুল বলেন, 'যাত্রাকে বাধা দিতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী যা করেছেন তাতে আমাদেরই ভালো হয়েছে। যে ধরনের প্রচার আমরা পেয়ে গিয়েছি, তা অসমের মুখ্যমন্ত্রী আমাদের পাইয়ে দিয়েছে। হয়তো এর পেছনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও থাকতে পারেন।'