করোনাভাইরাস চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ নিয়ে ‘ভুয়ো তথ্য’ ছড়িয়েছেন। সেই অভিযোগে ছত্তিশগড়ে যোগগুরু রামদেবের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হল। এমনটাই জানিয়েছেন রায়পুরের পুলিশ সুপার অজয় যাদব।
তিনি জানান, ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) হাসপাতাল বোর্ডের (ছত্তিশগড়) চেয়ারম্যান রাকেশ গুপ্ত, আইএমএয়ের (রায়পুর)) চেয়ারম্যান বিকাল আগরওয়াল-সহ অন্যান্য চিকিৎসকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় সেই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। রায়পুরের পুলিশ সুপার বলেছেন, ‘সেই মামলায় বিস্তারিত তদন্ত করা হবে। সেইমতো নেওয়া হবে আইনি ব্যবস্থা।’
অভিযোগপত্রে আইএমএ হাসপাতাল বোর্ডের (ছত্তিশগড়) চেয়ারম্যান রাকেশ জানিয়েছেন, ওষুধ নিয়ে ভুয়ো তথ্য ছড়াচ্ছেন রামদেব। যখন চিকিৎসক-সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, তখন স্বীকৃত চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। তিনি বলেন, ‘রামদেবের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে ঠিক কাজ করেছে ছত্তিশগড় পুলিশ। যিনি দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন এবং আন্তর্জাতিক নির্দেশিকা অমান্য করছেন। এরকম কাজের জন্য কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় রামদেবের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল। সেই ভিডিয়ো নিয়ে রীতিমতো বিতর্ক তৈরি হয়। ভিডিয়োটি তুলে ধরে গত শনিবার ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) তরফে অভিযোগ করা হয়, অ্যালোপাথিকে ‘বোকা বিজ্ঞান’ বলেছেন রামদেব। পাশাপাশি রেমডেসিভির, ফ্যাবি ফ্লু-সহ ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার অনুমোদিত বিভিন্ন ওষুধ করোনাভাইরাসের চিকিৎসা ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেন রামদেব। ‘অ্যালোপাথি ওষুধ নিয়ে লাখ লাখ রোগী মারা যাচ্ছেন’ বলেও দাবি করেন। সেই ‘অশিক্ষিত’ মন্তব্যের জন্য রামদেবের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনকে আর্জি জানায় দেশের চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ সংগঠন।
বিতর্কের মধ্যেই কড়া ভাষায় রামদেবকে চিঠি লেখেন হর্ষবর্ধন। তিনি জানান, অ্যালোপাথি নিয়ে রামদেবের মন্তব্য ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’। অ্যালোপাথি ওষুধ কোটি-কোটি মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে। বলেন, ‘করোনাভাইরাস যোদ্ধাদের অসম্মান হয়েছে সেই মন্তব্যে এবং দেশের ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। অ্যালোপাথি নিয়ে আপনার মন্তব্য আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের মনোবল ভেঙে দিতে পারে এবং করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইকে দুর্বল করে দিতে পারে।’ তারপর বিবৃতি জারি করে মন্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন রামদেব। তারপর আর স্বমহিমায় ফিরে একাধিক অ্যালোপথি চিকিৎসকদের প্রশ্ন ছুড়ে দেন।