MUMBAI : ছয় বছর আগে ট্রেন দুর্ঘটনায় দুই হাত খুইয়েছিলেন। শুক্রবার ২৪ বছরের তরুণীর সেই কাটা হাত ফের জোড়া লাগল প্রতিস্থান অস্ত্রোপচারের সাহায্যে।
অসাধ্যসাধন করলেন মুম্বইয়ের পরেলের গ্লোবাল হসপিটালের শল্যচিকিৎসকরা। শহরের প্রথম সফল প্রতিস্থাপন অস্ত্রোপচারের সাহায্যে কাটা হাত জোড়া লাগল তরুণীর। ১২ জন চিকিৎসকের দলে ছিলেন প্লাস্টিক সার্জন, মাইক্রোভাস্কুলার ও রিকনস্ট্রাক্টিভ সার্জন, অর্থোপেডিক সার্জন এবং অ্যানাস্থেসিস্টরা। দলটির নেতৃত্বে ছিলেন চিকিৎসক নীলেশ সতভাই। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে শষুরু হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দীর্ঘ ১৫ ঘণ্টা ধরে চলে অস্ত্রোপচার। আপাতত রোগী স্থিতিশীল রয়েছেন আইসিইউ বিভাগে ভর্তি ওই রোগী, জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র।
২০১৪ সালে ঘাটকোপর স্টেশনে চলন্ত লোকাল ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা ফস্কে রেললাইনের উপরে পড়ে গিয়ে দুই হাত কাটা পড়েছিল কুরলার বাসিন্দা মোনিকা মোরের। চার বছর পরে গ্লোবাল হসপিটালে হাত প্রতিস্থাপনের জন্য নাম নথিভুক্ত করান তিনি। তার পর চলে দাতার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা।
গত বৃহস্পতিবার গ্লোবাল হসপিটালের চেন্নাই শাখায় ভরতি এক তিরিশ বছরের যুবককে ‘ব্রেন ডেড’ ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তাঁর পরিবার যুবকের দুই হাত দান করতে সম্মত হয়। সঙ্গে সঙ্গে মৃত যুবকের দেহ থেকে হাতজোড়া বিচ্ছিন্ন করে চার্টার্ড বিমানে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বই।
মোনিকার কাকাল বিশ্বাস যাদব জানিয়েছেন, চেন্নাই থেকে হাত আনা এবং অস্ত্রোপচার বাবদ মোট ২৫ লাখ টাকার এক পয়সাও এখনও পর্যন্ত দিতে হয়নি তাঁদের পরিবারকে।
তিনি জানিয়েছেন, আপাতত আইসিইউ বিভাগে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় রয়েছেন মোনিকা। তাঁর জ্ঞান ফিরতে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জটিল অস্ত্রোপচারের পরে ঠিক কতটা সময় লাগবে মোনিকার সেরে উঠতে, তা নিশ্চিত বলা মুশকিল। তার উপরে, শহরে এর আগে এমন অস্তোপচার যে হেতু হয়নি, তাই এই বিষয়ে কোনও অভিজ্ঞতা নেই হাসপাতালকর্মীদের।
অস্ত্রোপচার সফল করার জন্য দাতা পরিবার, চেন্নাইয়ের গ্লোবাল হসপিটাল, তামিল নাডু সরকার, তামিল নাডু ও মহারাষ্ট্র ট্র্যাফিক পুলিশ এবং মুম্বই ও চেন্নাই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পরেল গ্লোবাল হসপিটালের তরফে সংস্থার মুখপাত্র।