প্রথম বর্ষের ছাত্রটির চুলের ছাঁট নাকি পছন্দ হয়নি মাষ্টারমশাইয়ের। তাই সেই তরুণকে নিয়ে সটান স্থানীয় সেলুনে হাজির তিনি। তারপর 'বেয়াড়া দেখতে' সেই চুলের ছাঁট উড়িয়ে তাঁকে ন্যাড়া করিয়ে দেন!
ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণী রাজ্য তেলঙ্গানার খাম্মাম জেলার একটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে। যে ছাত্রের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে, তিনি একজন ডাক্তারি পড়ুয়া। এবং যিনি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন, তিনি সেখানকার অধ্যাপক।
বিষয়টি নজরে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। সরকারের তরফ থেকে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রবিবার সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের তরফ থেকে সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে বলে এনডিটিভি-র একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
সরকারি সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, মেডিক্যাল পড়ুয়াকে সেলুনে নিয়ে গিয়ে ন্যাড়া করে দেওয়ার এই ঘটনাটি ঘটেছে গত ১২ নভেম্বর। ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ তেলঙ্গনার স্বাস্থ্য মন্ত্রী দামোদর রাজা নরোশিমা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রী নিজেই এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এবং জানিয়ে দিয়েছেন, এই ঘটনায় যিনি বা যাঁরা যুক্ত রয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। যদিও আধিকারিকদের তরফে একথাও জানানো হয়েছে যে এটি কোনও ব়্যাগিংয়ের ঘটনা নয়।
রাজ্য সরকারি আধিকারিকরা এই বিষয়ে আরও জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে সিনিয়র কয়েকজন ছাত্র ওই মেডিক্যাল পড়ুয়াকে বলেন, তাঁর চুলের ছাঁট 'মেডিক্যাল পড়ুয়াদের সঙ্গে মানানসই নয়'! ওই সিনিয়র ছাত্ররা সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াকে তাঁর চুলে ছাঁট বদলে ফেলার জন্য 'ট্রিম' করারও পরামর্শ দেন।
'সিনিয়র দাদা'দের কথা মতো ওই ছাত্র এরপর তাঁর চুল 'ট্রিম' করিয়ে নেন। কিন্তু, তাতেও মন ভরেনি সংশ্লিষ্ট অধ্যাপকের। যিনি আদতে একজন সহকারী অধ্যাপক। এবং তিনিই কলেজের অ্যান্টি-ব়্যাগিং কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিক্যাল অফিসার।
এরপর ওই অধ্যাপক ছাত্রটিকে বলেন, তাঁর চুলের ছাঁট 'বেয়াড়া'! তাই, তিনি ওই তরুণকে স্থানীয় একটি সেলুনে নিয়ে গিয়ে ন্যাড়া করিয়ে দেন!
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার আগে পর্যন্ত ওই অধ্যাপক কলেজের ছাত্রাবাসেই থাকতেন। কিন্তু, অধ্যক্ষ পুরো ঘটনা জানার পর তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেন এবং গত শনিবার তাঁকে হস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দেন। এই ঘটনায় আলাদা করে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন অধ্যক্ষ।
তিনি বলেন, একজন সহকারী অধ্যাপকের কাছ থেকে কখনই এমন আচরণ আশা করা যায় না। যদিও ওই অধ্যাপকের সহকর্মীদের সাফাই, তিনি ছাত্রদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাননি। কেবলমাত্র হস্টেলে ছাত্রদের মধ্যে নিয়মানুবর্তিতা বজায় রাখতে চেয়েছিলেন।