ফের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকতে হল প্রতিবেশী রাজ্য সিকিমকে। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সিকিমের গিয়ালসিং জেলায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্বত্য পথ ধরে যাওয়ার সময় কোনও ভাবে চারচাকা একটি গাড়ির চাকা হড়কে যায়। গাড়ির চালক সেটিকে আর নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি। ফলত, যাত্রীবোঝাই সেই গাড়ি পার্বত্য রাস্তার সীমানা ছাড়িয়ে নীচের খাদে গিয়ে পড়ে।
যে জায়গায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেই খাদের গভীরতা কয়েকশো ফুট। পুলিশের তরফে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি রাস্তা থেকে হড়কে গিয়ে রাটোম্য়াটে ক্লিফের নীচে প্রায় ৫০০ ফুট গভীরে পড়ে যায়।
দুর্ঘটনা ঘটার সময় ওই গাড়িতে সওয়ারি ছিলেন পাঁচজন। তাঁদের সকলেরই এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে। কাউকেই বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা এই দুর্ঘটনার খবর পুলিশকে দেন। সেই অনুসারে, শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছন স্থানীয় থানার কর্মী ও আধিকারিকরা। তাঁদের উপস্থিতিতেই উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়। দুর্ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ হতভাগ্য সওয়ারির দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনায় মৃতরা সকলেই সিকিমের বাসিন্দা। তাঁদের বাড়ি পশ্চিম সিকিমের ইয়ুকসোম-তাশিডিং নির্বাচনী এলাকার আপার আরতহ্যাং এলাকায়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে এই দুর্ঘটনায় মৃতদের নাম ও পরিচয় সামনে এসেছে। এঁরা হলেন - অভিষেক দাহাল, অভি কিশোর দাহাল, চন্দ্র বাহাদুর মাঙ্গার, কর্ণ বাহাদুর গুরুং এবং জীবন কার্কি।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিকেও পুলিশ উদ্ধার করেছে। সেটিরও নাম্বার প্লেট বলছে, সেটি সিকিমেরই গাড়ি। দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই ভয়াবহ ছিল যে তার ফলে গাড়িটি একেবারে দুমড়ে মুচড়ে যায়।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, পাঁচ সওয়ারি-সহ ওই গাড়িটি গিয়াথাংয়ের দিক থেকে আসছিল। গন্তব্য ছিল আপার চোংরাং। কিন্তু, সেই গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই সব শেষ হয়ে গেল!
তবে, চাকা হড়কে গাড়িটি খাদে গিয়ে পড়লেও ঠিক কী কারণে গাড়ির চাকা হড়কে গেল, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। চালক অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন, নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, সিকিমে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু নতুন কিছু নয়। এমনকী, বেড়াতে এসেও সিকিমে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বহু মানুষের প্রাণ যায়।
গত বছরেরই একেবারে শেষ লগ্নে এই ধরনের একটি ঘটনা ঘটে। পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় ৩২ বছরের এক তরুণী এবং তাঁর মাত্র আড়াই বছরের কন্যা সন্তানের। সেই একই দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন আরও তিন পর্যটক। এই পাঁচজনই কলকাতার বাসিন্দা। এছাড়াও, তাঁদের গাড়ির চালকও গুরুতর জখম হন। তাঁর বাড়ি পূর্ব সিকিমে।