আবার বাংলাকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বন্যার জন্য কয়েকটি রাজ্যকে আর্থিক বরাদ্দ করেছে। মোট ৬৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যার মধ্যে বাংলা এখনও পর্যন্ত একটি টাকাও পায়নি বলে রাজ্য সরকারের অভিযোগ। নাগাড়ে বৃষ্টি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে বানভাসী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে একাধিক রাজ্যে। এই অতিবৃষ্টি এবং ডিভিসির জল ছাড়ার জেরে বাংলার দক্ষিণবঙ্গে বন্যা হয়ে গিয়েছে। খোদ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই অভিযোগ করেছেন। কিন্তু বাংলা এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়লেও এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কোনও আর্থিক সাহায্য পায়নি।
এক্ষেত্রে তিনটি রাজ্য আর্থিক সাহায্য পেয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের কাছ থেকে। এই তিনটি রাজ্য হল—গুজরাট, মণিপুর এবং ত্রিপুরা। এই তিনটিই ডবল ইঞ্জিন সরকারের রাজ্য। অর্থাৎ বিজেপি শাসিত। তাই তাঁরা কেন্দ্রের সাহায্য পেয়েছে বলে অভিযোগ তুলছে বিরোধী রাজ্যগুলি। বিশেষ করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কদিন আগেই বলেছেন, এই রাজ্যে বন্যা হয়েছে। কেন্দ্র খোঁজও নেয়নি। কোনও টাকাও দেয়নি। এবার সেই কথায় যেন সিলমোহর পড়ল। গুজরাট পেয়েছে ৬০০ কোটি টাকা, মণিপুর পেল ৫০ কোটি টাকা এবং ত্রিপুরার জুটেছে ২৫ কোটি টাকা। বর্ষাকালে এই তিনটি রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তার সঙ্গে ধসও নেমেছে।
আরও পড়ুন: কলকাতার যুবতীকে বর্ধমানে লাগাতার ধর্ষণ করার অভিযোগ, যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ
এই বিষয়টি নিয়ে একটি সোমবার একটি বিবৃতি জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দেখানো পথে অঙ্গীকারবদ্ধ বন্যা দুর্গত রাজ্যগুলিকে সাহায্য করতে।’ এই বছরে বর্ষায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে—অসম, মিজোরাম, কেরল, তেলাঙ্গানা, নাগাল্যান্ড, গুজরাট, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং মণিপুর। আর ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে বাংলা। সেখানে এই তিন রাজ্য কেন্দ্রীয় আর্থিক সাহায্য পেয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল এইসব রাজ্যে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতি দেখে এসেছে। তারপরই আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে। বাংলায় কোনও কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল আসেনি। কোনও খোঁজখবর নেয়নি। তাই বাংলা বন্যার জন্য টাকাও পায়নি।
তবে সূত্রের খবর, বিহার এবং বাংলার বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় দল শীঘ্রই আসবে। তাঁরা এসে সরেজমিনে ক্ষয়ক্ষতি দেখবেন। তারপর কেন্দ্রকে রিপোর্ট দেবে। ওই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে টাকা আসবে বিহার এবং বাংলায়। বিহার এখন এনডিএ সরকারের শরিক। তাই সেটা দ্রুত মিলবে বলে মনে করছেন অনেকে। কিন্তু বাংলা কবে টাকা পাবে? সেটা সময় বলবে। আপাতত বঞ্চিত তকমা পড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চলতি বছরে কেন্দ্রীয় সরকার এসডিআরএফ–এর মাধ্যমে ৯০৪৪ কোটি টাকা দিয়েছে ২১টি রাজ্যে। ৪৫২৯ কোটি টাকা এনডিআরএফ দিয়েছে ১৫টি রাজ্যে। আর ১৩৮৫ কোটি টাকা ১১টি রাজ্যকে দেওয়া হয়েছে।