‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর অভিযানের আওতায় নয়া আর্থিক প্যাকেজের চতুর্থ অংশের ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। প্রায় ২০ লাখ কোটি টাকার সেই প্যাকেজে আওতায় আর কী কী জানালেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, তা একনজরে দেখে নিন -
খনিজ : খনিজ খোঁজা, উত্তোলন এবং উৎপাদনের কাজ একসঙ্গে করা যাবে। আগে তা আলাদা আলাদা করা হত। ৫,০০০ ব্লক বরাদ্দ করা হবে। আগে জটিলতার কারণে অনেকে বিদেশে চলে গিয়েছেন। বিদ্যুতের দাম কমবে। অ্যালুমিনিয়াম ক্ষেত্রে বাড়তি জোর। যাতে বিদ্যুতের মাসুল হ্রাস পায়।
কয়লা ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক উত্তোলনে ছাড়পত্র দেওয়া হল। এতদিন শুধুমাত্র সরকারের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। কয়লা থেকে গ্যাস পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ইনসেনটিভ দেওয়া হবে। কোল ব্লক বিক্রি করা হবে। উত্তোলন সংক্রান্ত পরিকাঠামোর জন্য ৫০,০০০ কোটি বরাদ্দ করবে কেন্দ্র। ভারতের কাছে বিশ্বের প্রচুর কয়লা সঞ্চিত আছে। বিশ্বে তৃতীয় সর্বাধিক কয়লা ভাণ্ডার আছে।
আটটি ক্ষেত্র নিয়ে ঘোষণা করা হবে। সেগুলি হল - কয়লা, খনিজ, প্রতিরক্ষা উৎপাদন, বিভিন্ন সামগ্রী, সিভিল অ্যাভিয়েশন (এয়ারস্পেস ম্যানেজমেন্ট, এমআরও এবং বিমানবন্দর), বিদ্যুৎ সরবরাহ ক্ষেত্র, মহাকাশ এবং পরমাণু শক্তি।
কাঠামোগত সংস্কার নিয়ে আজকের ঘোষণা করা হচ্ছে। বিনিয়োগ টানতে কাঠামোগত সংস্কারে জোর দেওয়া হচ্ছে। নীতি সরলীকরণ থেকে দ্রুত বিনিয়োগ করার লক্ষ্যে আজকের ঘোষণা করা হচ্ছে। ভারতে ৩,৩৭৬ টি শিল্প পার্ক চিহ্নিত করা হয়েছে।
কর্পোরেটাইজড করা হচ্ছে অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিগুলিকে। তবে তা বেসরকারিকরণ করা হচ্ছে না। ভালো ম্যানেজমেন্টের জন্য করা যাচ্ছে। আমজনতাও শেয়ার কিনতে পারবেন। এফডিআই-র মাত্রা ৪৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৪ শতাংশ করা হল।
'মেক ইন ইন্ডিয়া'-য় বল দেওয়ার জন্য এবং স্বনির্ভরতা বাড়ানোর জন্য প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানি করার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ চাপানো হবে। যাতে ভারতেই সমরাস্ত্র তৈরি হয়। বিদেশ থেকে অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামগুলির আমদানিও কম করা হবে। সেজন্য আলাদা অর্থ বরাদ্দ করা হবে।
এয়ারস্পেস ম্যানেজমেন্ট : উড়ানের সময় কমানো হবে। ফলে বিমানের উড়ানের দক্ষতা বাড়বে। জ্বালানি তেল কম পুড়বে। তিনটি বিমানবন্দরের পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য ছ'টির মধ্যে তিনটি বিমানবন্দর পিপিইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে। প্রথম দফায় ছ'টি বিমানবন্দরের বার্ষিক আয় হবে ১,০০০ কোটি টাকা। আরও ২,৩০০ কোটি টাকার ডাউন পেমেন্ট পাবে এএআই। দ্বিতীয় দফার জন্য ছ'টি বিমানবন্দর চিহ্নিত করা হয়েছে। তৃতীয় দফায় ছ'টি বিমানবন্দরের নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রথম দু'দফায় ১২ টি বিমানবন্দরে বাড়তি ১৩,০০০ কোটি বেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা।
ভারতকে এমআরও হাব বানানো হবে। যাতে দেশেই বিমান তৈরি হয়। রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। ভারতের দক্ষতা আছে। ফলে কম খরচ পড়বে। দেশে চাকরি বাড়বে। সামরিক এবং অসামরিক উভয় বিমানের ক্ষেত্রেই তা করা হবে।
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিদ্যুৎ সংস্থার (ডিসকম) বেসরকারিকরণ করা হবে। যে সংস্থাগুলি অদক্ষ, তাদের দক্ষতা বাড়ানো হবে। ফলে গ্রাহকের বিদ্যুতের মাসুল কম হবে। কারেন্ট অফ হয়ে গেলে জরিমানা করা হবে।
সামাজিক পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ৮,১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ।
গত কয়েক বছরে মহাকাশ ক্ষেত্রে দারুণ কাজ করেছে ভারত। মহাকাশ সংক্রান্ত কাজে বেসরকারি অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে মহাকাশ অভিযানে অংশগ্রহণের জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলিকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।
মেডিক্যাল আইসোটোপ তৈরির জন্য রিসার্চ রিঅ্যাক্টর তৈরি করা হবে। পিপিই মডেলে তৈরি করা হবে। ভারতীয় স্টার্ট-আপের সঙ্গে পরমাণু ক্ষেত্রকে যুক্ত করা হবে। প্রযুক্তি উন্নয়ন ও প্রযুক্তিবিদদের মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য টেকনোলজি ডেভেলপমেন্ট কাম ইনকিউবেশন সেন্টার তৈরি করা হবে।